Skip to main content

দশম নির্বাচন : কার লাভ, কার ক্ষতি?



শাহনেওয়াজ খান



সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হলো দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। একতরফা নির্বাচন শেষ হলেও সমস্যার কিন্তু শেষ হয়নি। টানা কয়েক মাস ধরে বিপর্যস্ত দেশে আগামী মাসগুলোতেও তেমন ভালো অবস্থার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তবে নির্বাচনের পর ইতোমধ্যে লাভ-ক্ষতির হিসাব কষতে শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলো।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ খালি মাঠে গোল দিয়ে (দলটির সভাপতির ভাষায়) এটাকে জনগণের ম্যান্ডেট হিসেবে প্রচার করে নিজেদের লাভের অংশীদার করছে। অপরদিকে নির্বাচন জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে বলে নিজেদের জয়ী ভাবছে বিএনপি। উভয় দলকে বুঝাতে এবং সুষ্ঠু সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা রাষ্ট্র। ওদিকে যথারীতি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষে আছে ভারত।

অবস্থায় লাভ-ক্ষতির হিসাব করতে একটু অন্যদিকে চোখ ফেরানো যাক। কয়েক মাস ধরে একটানা সহিংসতা, হরতাল, অবরোধে দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে জনগণ। এমন অবস্থায় বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক খাত গার্মেন্ট শিল্প স্বাভাবিকভাবেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে অনেক অর্ডার বাতিল করেছে বিশ্বের নামিদামি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। সুযোগটি লুফে নিয়েছে ভারত। বাংলাদেশের বেশিরভাগ অর্ডারগুলো চলে গেছে তাদের প্রতিষ্ঠানের হাতে। সুতরাং, ভারত কেন চাইবে সহিংসতা কমুক!

বাংলাদেশের চলমান সঙ্কটে সরকারকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে আনতে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অবরোধ আসতে পারে বলে বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর প্রকাশ হয়েছে। এক্ষেত্রেও আওয়ামী লীগ সরকারকে সাহস জোগাচ্ছে ভারত। নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে তারা।

শেষ পর্যন্ত যদি স্বল্পমাত্রায় অবরোধ আরোপ করা হয় সেক্ষেত্রে আওয়ামী সরকারের প্রধান সহায় হবে ভারত। সুযোগে ভারতীয় পণ্য অবাধে প্রবেশ করবে বাংলাদেশে। দেশ পরিণত হবে ভারতীয় পণ্যের বাজারে। অর্থাৎ পুরোপুরি ভারত নির্ভর হয়ে যেতে হবে সরকারসহ পুরো দেশকে। সুতরাং, বোঝাই যাচ্ছে ভারত কেন একতরফা আওয়ামী লীগের পক্ষে। যে কোনো মূল্যে আওয়ামী লীগ টিকে গেলেই তাদের স্বার্থ হাসিল।

আরেক প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান চাচ্ছে সহিংসতা বা যে কোনো মাধ্যমেই হোক জামায়াত নেতাদের ফাঁসি ঠেকানো দলটিকে নিশ্চিহ্ন হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে। জন্য তাদের চেষ্টারও কমতি নেই।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য রাষ্ট্রগুলো একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি টিকিয়ে রাখা তাদের স্বার্থ হাসিলের পথে আছে। বর্তমান পরিস্তিতিতে তাদের বিএনপির দিকে ঝুঁকে থাকাটাই স্বাভাবিক। অতিমাত্রায় ভারতকেন্দ্রিকতা একতরফা নির্বাচন করে সাময়িকভাবে টিকে যাওয়া আওয়ামী লীগ তাদের খুব বেশি শর্ত মেনে নেবে না। সেক্ষেত্রে বিএনপি বরং সুবিধাজনক অবস্থানে। গণআন্দোলনে ব্যর্থ দলটি এখন তাকিয়ে আছে বিদেশি শক্তির দিকে। ক্ষমতায় আসতে তারা এখন যে কোনো শর্ত মেনে নেওয়ার মতো অবস্থায় আছে। সুযোগটি নিঃসন্দেহে কাজে লাগাবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ মুরব্বি দেশগুলো।

দেশের বর্তমান অবস্থার পরিবর্তনে সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিকল্প নেই। তাই বিদেশিদের নাক গলানোর সুযোগটা বর্তমানে একটু বেশিই। কারণ রাজনৈতিক দলগুলো জনগণকে তাদের পাশে না নিয়ে ছুটছে বিদেশের পানে। নিজ নাগরিকদের তুষ্ট না রেখে তারা বিদেশিদের তুষ্ট রাখতে ব্যস্ত। অবস্থা কখনোই একটি দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়।

লেখা আর বাড়াতে চাচ্ছি না। তবে শেষে একটি কথা বলতে চাই, সম্প্রতি দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করে রাজ্য ক্ষমতায় বসেছে মাত্র এক বছর বয়সী আম আদমি পার্টি। জানি না, আম আদমি সরকার চালনায় শেষ পর্যন্ত সফল হবে কিনা? দিল্লির জনগণও সেটা জানে না। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট, এটা কংগ্রেস, বিজেপি সবাইকে একটা সঙ্কেত দিয়েছে। যতই ঐতিহ্য আর রাজনৈতিক মুন্সিয়ানা থাকুক না কেন, জনগণের জন্য কাজ না করলে রাজনীতিকদের ছুঁড়ে ফেলতে তারা বিন্দুমাত্র পিছপা হবে না। বাংলাদেশের রাজনীতিকরা বিষয়টা ভেবেছেন কি?

Comments

Popular posts from this blog

Never promoted terror, says Naik

News Express Desk : Accused of giving hate speeches, inciting acts of terror and disrespecting other religions, Dr. Naik said he had a right to express his view, given to him by the Constitution. He said he believed his religion was the best because, “the Koran says it. No other religious text or scripture claims this fact.” About inciting acts of terror, he challenged the media “to find out any instance where I have promoted terrorism or praised an act of terrorism.” In one of the clips floated on social media, Dr. Naik is seen supporting Al-Qaeda founder Osama bin Laden. He claimed that this clip was doctored and being used out of context. He said he was “neither a saint, nor a terrorist for me.” Preacher Zakir Naik on Friday at a small banquet hall in Mazgaon, addressed media persons via Skype: “My statements were taken out of context; they were half sentences, and were doctored. I am a messenger of peace. It is condemnable for any human, whether Muslim or non-Muslim, to attac...

এখনো চলছে রোহিঙ্গা নিধন

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে এখনো রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে প্রমাণ পেয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞে সেনা সদস্যদের পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র নিয়ে স্থানীয় বৌদ্ধরাও অংশ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এমনকি ২৫ আগস্টের আগে থেকেই রাখাইনে সেনা অভিযান চালানোর প্রস্তুতির প্রমাণ পেয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতায় স্বাক্ষর করলেও এখন নিধনযজ্ঞ থামেনি বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা এরআরডব্লিউ। সমঝোতার পরও রোহিঙ্গা গ্রাম পুড়িয়ে ফেলার আলামত পেয়েছেন তারা। স্থানীয় সময় গত রোববার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইনে আংশিক বা পুরোপুরি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ৩৫৪টি গ্রাম। এখনো বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণের পর সংস্থাটি জানায়, ছবিগুলো প্রমাণ করছে যে এই ধ্বংসযজ্ঞ এমন সময়েও চালানো হয়েছে যখন রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে মিয়া...

ফিলিস্তিনের ‘স্পাইডারম্যান’

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক : ১২ বছরের এক শিশুর কাজকারবারও এইটুকুন হওয়ার কথা। কিন্তু ফিলিস্তিনের পুঁচকে বালক মোহাম্মদ আল শেখের কাজকারবার দেখে ভিরমি লেগে যাবে অনেকের। এই বয়সেই ও নিজের শরীরকে দুমড়ে-মুচড়ে নানা কসরত দেখাতে পারে। তাক লাগানোর মতো সেসব কসরত। বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা শহরের তেল আল-হাওয়া এলাকার চার ফুট ছয় ইঞ্চি লম্বা ও ২৯ কিলোগ্রাম ওজনের মোহাম্মদ আল শেখ অসম্ভব সব শারীরিক কসরত দেখাতে পারে। নিজের পায়ের পাতা উল্টো দিক দ িয়ে নিয়ে এসে কাঁধের ওপর নিতে পারে সে। নিজের শরীরকে কয়েক ভাঁজ করে রেখে দিতে পারে। এ ছাড়া উঠের পিঠে উঠে ‘স্পাইডারম্যানের’ মতো লাফাতেও পারে সে। আর এ কারণে ফিলিস্তিনের গাজাবাসী তাকে ‘স্পাইডারম্যান’ আখ্যাও দিয়েছে। ওই এলাকায় এখন সে তারকা। তবে এই তারকাখ্যাতি পেয়ে ক্ষান্ত নয় মোহাম্মদ, এখন সবাইকে তাক লাগানো শারীরিক কসরত দেখিয়ে নিজের নামটি সে লিখে নিতে চায় গিনেস বুকের পাতায়। ২০১৪ সালে হাজায় ইসরায়েলি হামলায় দুই সহস্রাধিক ফিলিস্তিনির প্রাণহানি হয়। এ সময় প্রায় ৫০ দিন প্রশিক্ষণ বন্ধ থাকে মোহাম্মদের। এই যুদ্ধাবস্থার মাঝেও লেব...