Skip to main content

কাশ্মীরে গুলিতে আহতদের জন্য হৃদয়স্পর্শী প্রচারণা




নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক : ভারত-শাসিত কাশ্মীরের প্রতি বিশ্ববাসীর দৃষ্টি ফেরাতে এক অভিনব প্রচারণা চালাচ্ছে পাকিস্তানের একটি ফেসবুক পেজ৷ ভারতের বিখ্যাত ব্যক্তিদের চোখেমুখে ছররা গুলির আঘাত-চিহ্ন এঁকে তাদের মর্মস্পর্শী চিঠি জুড়ে দেওয়া হয়েছে সেখানে৷

কাশ্মীরে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে বহুদিন ধরেই৷ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সামরিক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রায়ই সেখানে ছররা গুলি ব্যবহার করে থাকে৷ তারা এটিকে প্রাণঘাতী নয় বলে দাবি করলেও, গত কয়েকদিনে কাশ্মীরে ঘটে যাওয়া বিক্ষোভ এবং সহিংসতায় অসংখ্য কাশ্মীরবাসী ছররা গুলির আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন৷ এদের মধ্যে শিশু-কিশোররাও রয়েছে, যারা কোনো বিক্ষোভ-স্থলে উপস্থিতই ছিল না৷ ডাক্তাররা বলছেন, এদের মধ্যে অনেকেই চোখে গুলির ক্ষতের কারণে চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারাবেন৷

‘নেভার ফর্গেট পাকিস্তান’ শীর্ষক ফেসবুক পাতায় শেয়ার হওয়া ‘হোয়াট ইফ ইউ নিউ দ্য ভিক্টিম?’ নামের একটি অ্যালবামে ভারতীয় অভিনেতা-অভিনেত্রী শাহরুখ খান, অমিতাভ বচ্চন, ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন, আলিয়া ভাট, সাইফ আলি খান, কাজল ও ঋত্বিক রোশন ছাড়াও স্থান পেয়েছেন রাজনীতিবিদরা৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও সোনিয়া গান্ধীকেও এই প্রচারণার অংশ হিসেবে রাখা হয়েছে৷ এমনকি ভারতীয় ক্রিকেট তারকা বিরাট কোহলিও আছেন একটি ছবিতে; পাশাপাশি একমাত্র অ-ভারতীয় হিসেবে রয়েছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ (বানানভেদে সাকারবার্গ)৷
জাকারবার্গের প্রতি কাশ্মীরের তরুণদের নামে লেখা চিঠিতে তুলে ধরা হয়েছে ফেসবুকের কিছু সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড৷ রয়েছে ‘কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড'-এর নামে গুলিবিদ্ধদের ছবি সরিয়ে ফেলার কথা অথবা ভারত সরকার যেভাবে কাশ্মীরে মোবাইল ইন্টারনেট ও পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছে, তার কথা৷

একইভাবে নরেন্দ্র মোদির কাছে লেখা চিঠিটি কাশ্মীরের একজন ডাক্তারের নাম লেখা, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে চলমান এই ছররা গুলির ব্যবহারের বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে৷

‘বিগ বি' অমিতাভ বচ্চনের কাছে লেখা চিঠিটিতে এক গুলিবিদ্ধ যুবকের বাবা অভিযোগ করছেন যে, এক প্রতিবন্ধীকে সিআরপিএফ বাহিনীর আক্রমণ থেকে বাঁচাতে গিয়ে তার সন্তানকে গুলি খেতে হয়েছে৷

সোনিয়া গান্ধীর কাছে লেখা চিঠিটিতে একজন ডাক্তার জানান যে, তাদের সব ডাক্তারদের ঈদের ছুটি বাতিল করে হাসপাতালে ফিরতে হয়েছে, এবং সেখানকার পাঁচ-পাঁচটি অপারেশন টেবিল সারাক্ষণ ব্যস্ত রয়েছে৷

বিরাট কোহলির কাছে লেখা হৃদয়বিদারক চিঠিটি লেখা হয়েছে গুলির আঘাতে দৃষ্টি হারানো এক ক্রিকেটারের নামে৷ ছবিতে দেখানো আহত বিরাটকে সে বলছে ‘হয়ত আমার মতো তুমিও আর বল দেখতে পাবে না৷ অবশ্য আর্মি বলছে, আমরা প্রাণে বেঁচে থাকতে পারবো৷'

এছাড়াও অভিনেতা সাইফ আলি খান ও ঋত্বিক রোশনকে লেখা চিঠিতে ‘ফ্যান্টম' ও ‘মিশন কাশ্মীর' ছবিতে তাঁদের চরিত্রের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে৷

অভিনেত্রী কাজলের কাছে লেখা চিঠিটি গুলিতে আহত এক ন'বছর বয়সি মেয়ের মায়ের৷ মেয়েটির ওপর যখন গুলি চালানো হয়, তখন সে তার নিজের ঘরে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল৷

বলা বাহুল্য, এমন শক্তিশালী ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অচিরেই ছড়িয়ে পড়েছে৷ ফেসবুক ও টুইটারে অনেকেই ছবির সেলেব্রিটিদের ট্যাগ করছেন৷ তবে এখনও পর্যন্ত এঁদের কেউ-ই তার জবাব দেননি৷ তবে টুইটকারীরা ‪#‎ইন্ডিয়া‬-কান্ট-সি অথবা ‪#‎লেট‬-কাশ্মীর-ডিসাইড হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে তাদের মতামত জানাচ্ছেন৷

এদিকে ছবিগুলো নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে ভারতীয়দের মধ্যে৷ পাকিস্তানি একটি ফেসবুক পেজ থেকে এমন প্রচারণায় ক্ষুব্ধ হচ্ছেন অনেক ভারতীয়৷ অনেকেই পাকিস্তানের সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতা নিয়ে সেসব ছবিতে মন্তব্য করছেন৷

(এসকে/জুলাই ২৭, ২০১৬)

Comments

Popular posts from this blog

হিন্দুবিদ্বেষী ছিলেন না সম্রাট আওরঙ্গজেব

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক: মুঘল সম্রাটদের মধ্যে কেবল একজনই ভারতীয়দের মধ্যে স্থান করে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন - তিনি আলমগীর আওরঙ্গজেব। সাধারণ মানুষের মধ্যে আওরঙ্গজেবের ইমেজ হলো একজন ধর্মীয় গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবে , যিনি হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর যিনি নিজের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে এমনকি নিজের বড় ভাই দারা শিকোকে পর্যন্ত রেহাই দেননি। তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি বৃদ্ধ পিতাকে আগ্রার একটি দুর্গে তার জীবনের শেষ সাড়ে সাত বছর বন্দি করে রেখেছিলেন। সম্প্রতি পাকিস্তানী নাট্যকার শাহীদ নাদিম লিখেছেন যে ভারত ভাগের বীজ সত্যিকার অর্থে সেদিনই বপন করা হয়েছিল , যেদিন আওরঙ্গজেব তার ভাই দারাকে পরাজিত করেছিলেন। জওহরলাল নেহরুও ১৯৪৬ সালের প্রকাশিত তার বই ‘ ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া ’ তে আওরঙ্গজেবকে একজন গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন। তবে মার্কিন ইতিহাসবিদ অড্রে ট্রাশকা তার বই ‘ আওরঙ্গজেব - দ্যা ম্যান অ্যান্ড দ্যা মিথ ’ বইয়ে লিখেছেন যে আওরঙ্গজেব হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর তাই মন্দির ধ্বংস কর

দাঁড়িয়ে পানি পান কি ঠিক?

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক : সময় কিংবা অভ্যাসের কারণে আমরা অনেকেই দাঁড়িয়ে পানি পান করি। কিন্তু এই অভ্যাসের মাধ্যমে আমরা ডেকে আনছি বিপদ। একটা নয়, একগুচ্ছ রোগ বাসা বাঁধছে শরীরে। ভুগতে হচ্ছে কিডনি সমস্যায়। শরীরে পানির গুরুত্ব অনেক। কিন্তু ভুল নিয়মে পানি, বিশেষ করে রাস্তাঘাটে চলতে ফিরতে ঢকঢক করে পানি পানের অভ্যাসে শরীরে বাসা বাঁধছে নানা রোগ- এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। দাঁড়িয়ে পানি পানের কুফল শরীরে টক্সিনের পরিমাণ বাড়ে: পানি পানের পরেই শরীরের ছাঁকনিগুলো শরীরকে পরিশ্রুত করার কাজ শুরু করে। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরের ভিতরে থাকা ছাঁকনিগুলো সংকুচিত হয়ে যায়। পরিশ্রুত করার কাজ বাধা পায়। ফলে, শরীরে টক্সিনের মাত্রা বাড়তে থাকে। পাকস্থলীতে ক্ষত: দাঁড়িয়ে পানি পান করলে তা সরাসরি পাকস্থলীতে গিয়ে আঘাত করে। পাকস্থলী থেকে নিঃসৃত অ্যাসিডের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বদহজমের আশঙ্কা বাড়ে। তলপেটে যন্ত্রণাসহ একাধিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর্থারাইটিসের আশঙ্কা: দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরের মধ্যে থাকা কিছু উপকারী রাসায়নিকের মাত্রা কমতে থাকে। ফলে হাড়ের জোড়ায় কর্মক্ষমতা কমে যায়। সেখান থেকে আর্থারাইটিসের আশ

হরিণের রাজ্যে

শাহনেওয়াজ খান আমরা দশ-বারোজন মিলে চারদিক থেকে ঘিরে ধরলাম হরিণের পালটাকে। ৬০-৭০টা হরিণ হবে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ঘুরে ঘুরে পালটাকে ঘিরে ধরেছি। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসায় আলো দ্রুত কমে যাচ্ছে। শেষ সময়, সুতরাং সবাই চারদিক দিয়ে এক নিঃশ্বাসে দৌড় দিলাম হরিণের পালকে আটকাতে। কি অপূর্ব সেই দৃশ্য! আমার দু’পাশ দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে হরিণ। এত জোরে দৌড়াচ্ছে যে পায়ের নিচের খুড়ের অংশগুলো ঠিক স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। হরিণের ওপর ঝাঁপ দিয়ে পড়ার ইচ্ছেটা শুরুতেই তো বড় বড় শিং দেখে মারা গিয়েছিল। এখন দৌড় দেখে উল্টো চুপসে গেলাম। মনে মনে প্রার্থনা শুরু করলাম, হে আল্লাহ, শিং বা খুরের আঁচড় যেন গায়ে না লাগে। বর্ণনা শুনে মনে হচ্ছে, এটা সুন্দরবন বা বিদেশি কোনো সাফারি পার্কের দৃশ্য? না, এটা আমাদের গর্ব নিঝুম দ্বীপের গল্প। খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষগুলোর দ্বীপে যেখানে হরিণই চাঞ্চল্যের উৎস। তবে এই হরিণগুলো কিন্তু শুধু দ্বীপের পরিবেশকেই নয়, মানুষগুলোকেও ব্যস্ত রাখে। দল বেধে এসে নষ্ট করে দেয় ক্ষেতের ফসল। ২০০৯ সালের শুরুর দিকে শীত মৌসুমে গিয়েছিলাম নোয়াখালীর হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে। তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স