Skip to main content

অ্যালকোহল মানেই ক্ষতিকর




নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক : অনেক দেশেই লোকজন দিনে অল্প পরিমাণ অ্যালকোহল সেবনকে স্বাস্থ্যকর ভেবে থাকেন। কিন্তু নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে তা ভুল। যত কমই হোক, যেকোনো মাত্রার অ্যালকোহল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। 

গবেষকরা বলছেন, পরিমিত মদ্যপানে হৃদরোগের ঝুঁকি কমার সম্ভবনা থাকলেও এর ফলে ক্যান্সার এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকি এতটাই বেড়ে যায় যে আখেরে ক্ষতিটাই বড় হয়ে দাঁড়ায়। ২৬ বছর ধরে ১৯৫টি দেশের মানুষের অ্যালকোহল পান ও তাদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে বিস্তৃত এই গবেষণার ওপর একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে চিকিৎসা বিষয়ক জার্নাল ল্যানসেট।

বিবিসি জানায়, বিভিন্ন দেশের ১৫ থেকে ৯৫ বছর বয়সী মানুষের ওপর পরিচালিত এ গবেষণায় যারা একেবারেই অ্যালকোহল নেন না, তাদের সঙ্গে যারা দিনে অন্তত এক ইউনিট হলেও অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় পান করেন তাদের তুলনা করা হয়। গবেষকরা দেখেছেন, মদ্যপান একেবারেই করেন না এমন ব্যক্তিদের মধ্যে প্রতি লাখে ৯১৪ জন ক্যান্সারের মত স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেন। আর দিনে এক ইউনিট অ্যালকোহল নেন যারা, তাদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা চারজন বেড়ে যায়। এই হার স্বাভাবিকের তুলনায় শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।

দুই ইউনিট অ্যালকোহল পান করেন এমন ব্যক্তিদের মধ্যে বছরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যায় ৬৩ জন, অ্যালকোহল নেন না এমন ব্যক্তিদের তুলনায় তা ৭ শতাংশ বেশি। পাঁচ ইউনিট অ্যালকোহল নেন এমন ব্যক্তিদের মধ্যে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিল সমস্যায় আক্রান্তের হার বেড়ে যায় ৩৭ শতাংশ। গবেষণায় ১২ মিলিলিটারের সমপরিমাণ অ্যালকোহলকে এক ইউনিট ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।

নাগরিকদের মদ্যপানের হার বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাজ্য সরকার ২০১৬ সালে অ্যালকোহল সেবনের ‘নিরাপদ মাত্রা’ হিসেবে পূর্ণবয়স্ক নারী ও পুরুষের জন্য সপ্তাহে সর্বোচ্চ ১৪ ইউনিট নির্ধারণ করে দিয়েছিল। ওই মাত্রাও যে নিরাপদ নয়, গবেষণায় সেই প্রমাণ পাওয়ার কথা তুলে ধরে গবেষক দলের অন্যতম সদস্য লন্ডন ইম্পেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক সোনিয়া সাক্সেনা বলেন, ‘সামান্য পরিমাণ অ্যালকোহলেও ঝুঁকি থেকে যায়। দিনে একটা ড্রিংক শুনলে ঝুঁকির মাত্রা হয়ত কম মনে হয়, কিন্তু পুরো যুক্তরাজ্যের জনসংখ্যার সঙ্গে তুলনা করুন, সংখ্যাটা অনেক বড়। আর বেশিরভাগ মানুষই দিনে কেবল একটা ড্রিংকে থামেন না।’

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ ম্যাট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশনের (আইএইচএমই) ড. ম্যাক্স গ্রিসোল্ড এ গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। তিনি বলেন, ‘আগের গবেষণাগুলোতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অ্যালকোহল পানের ইতিবাচক দিক খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু সব মিলিয়ে যে স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হয় তা মারাত্মক। প্রথম দিকে দিনে এক ইউনিট অ্যালকোহলে ঝুঁকি কম থাকলেও মানুষ ধারাবাহিকভাবে মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, তাদের ঝুঁকিও বাড়তে থাকে।’

বিবিসি লিখেছে, বিশ্বের প্রতি তিন জনের একজন অ্যালকোহল সেবন করেন বলে ধারণা পাওয়া গেছে এ গবেষণায়। আর বিশ্বজুড়ে ১৫ থেকে ৪৯ বয়সী মানুষের মৃত্যুর এক দশমাংশ ক্ষেত্রে অ্যালকোহলের যোগ পাওয়া যায়।

(এসকে/২৪ আগস্ট, ২০১৮)

Comments

Popular posts from this blog

হিন্দুবিদ্বেষী ছিলেন না সম্রাট আওরঙ্গজেব

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক: মুঘল সম্রাটদের মধ্যে কেবল একজনই ভারতীয়দের মধ্যে স্থান করে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন - তিনি আলমগীর আওরঙ্গজেব। সাধারণ মানুষের মধ্যে আওরঙ্গজেবের ইমেজ হলো একজন ধর্মীয় গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবে , যিনি হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর যিনি নিজের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে এমনকি নিজের বড় ভাই দারা শিকোকে পর্যন্ত রেহাই দেননি। তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি বৃদ্ধ পিতাকে আগ্রার একটি দুর্গে তার জীবনের শেষ সাড়ে সাত বছর বন্দি করে রেখেছিলেন। সম্প্রতি পাকিস্তানী নাট্যকার শাহীদ নাদিম লিখেছেন যে ভারত ভাগের বীজ সত্যিকার অর্থে সেদিনই বপন করা হয়েছিল , যেদিন আওরঙ্গজেব তার ভাই দারাকে পরাজিত করেছিলেন। জওহরলাল নেহরুও ১৯৪৬ সালের প্রকাশিত তার বই ‘ ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া ’ তে আওরঙ্গজেবকে একজন গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন। তবে মার্কিন ইতিহাসবিদ অড্রে ট্রাশকা তার বই ‘ আওরঙ্গজেব - দ্যা ম্যান অ্যান্ড দ্যা মিথ ’ বইয়ে লিখেছেন যে আওরঙ্গজেব হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর তাই মন্দির ধ্বংস কর

দাঁড়িয়ে পানি পান কি ঠিক?

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক : সময় কিংবা অভ্যাসের কারণে আমরা অনেকেই দাঁড়িয়ে পানি পান করি। কিন্তু এই অভ্যাসের মাধ্যমে আমরা ডেকে আনছি বিপদ। একটা নয়, একগুচ্ছ রোগ বাসা বাঁধছে শরীরে। ভুগতে হচ্ছে কিডনি সমস্যায়। শরীরে পানির গুরুত্ব অনেক। কিন্তু ভুল নিয়মে পানি, বিশেষ করে রাস্তাঘাটে চলতে ফিরতে ঢকঢক করে পানি পানের অভ্যাসে শরীরে বাসা বাঁধছে নানা রোগ- এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। দাঁড়িয়ে পানি পানের কুফল শরীরে টক্সিনের পরিমাণ বাড়ে: পানি পানের পরেই শরীরের ছাঁকনিগুলো শরীরকে পরিশ্রুত করার কাজ শুরু করে। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরের ভিতরে থাকা ছাঁকনিগুলো সংকুচিত হয়ে যায়। পরিশ্রুত করার কাজ বাধা পায়। ফলে, শরীরে টক্সিনের মাত্রা বাড়তে থাকে। পাকস্থলীতে ক্ষত: দাঁড়িয়ে পানি পান করলে তা সরাসরি পাকস্থলীতে গিয়ে আঘাত করে। পাকস্থলী থেকে নিঃসৃত অ্যাসিডের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বদহজমের আশঙ্কা বাড়ে। তলপেটে যন্ত্রণাসহ একাধিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর্থারাইটিসের আশঙ্কা: দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরের মধ্যে থাকা কিছু উপকারী রাসায়নিকের মাত্রা কমতে থাকে। ফলে হাড়ের জোড়ায় কর্মক্ষমতা কমে যায়। সেখান থেকে আর্থারাইটিসের আশ

হরিণের রাজ্যে

শাহনেওয়াজ খান আমরা দশ-বারোজন মিলে চারদিক থেকে ঘিরে ধরলাম হরিণের পালটাকে। ৬০-৭০টা হরিণ হবে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ঘুরে ঘুরে পালটাকে ঘিরে ধরেছি। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসায় আলো দ্রুত কমে যাচ্ছে। শেষ সময়, সুতরাং সবাই চারদিক দিয়ে এক নিঃশ্বাসে দৌড় দিলাম হরিণের পালকে আটকাতে। কি অপূর্ব সেই দৃশ্য! আমার দু’পাশ দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে হরিণ। এত জোরে দৌড়াচ্ছে যে পায়ের নিচের খুড়ের অংশগুলো ঠিক স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। হরিণের ওপর ঝাঁপ দিয়ে পড়ার ইচ্ছেটা শুরুতেই তো বড় বড় শিং দেখে মারা গিয়েছিল। এখন দৌড় দেখে উল্টো চুপসে গেলাম। মনে মনে প্রার্থনা শুরু করলাম, হে আল্লাহ, শিং বা খুরের আঁচড় যেন গায়ে না লাগে। বর্ণনা শুনে মনে হচ্ছে, এটা সুন্দরবন বা বিদেশি কোনো সাফারি পার্কের দৃশ্য? না, এটা আমাদের গর্ব নিঝুম দ্বীপের গল্প। খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষগুলোর দ্বীপে যেখানে হরিণই চাঞ্চল্যের উৎস। তবে এই হরিণগুলো কিন্তু শুধু দ্বীপের পরিবেশকেই নয়, মানুষগুলোকেও ব্যস্ত রাখে। দল বেধে এসে নষ্ট করে দেয় ক্ষেতের ফসল। ২০০৯ সালের শুরুর দিকে শীত মৌসুমে গিয়েছিলাম নোয়াখালীর হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে। তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স