Skip to main content

ফিলিস্তিনের ‘স্পাইডারম্যান’




নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক : ১২ বছরের এক শিশুর কাজকারবারও এইটুকুন হওয়ার কথা। কিন্তু ফিলিস্তিনের পুঁচকে বালক মোহাম্মদ আল শেখের কাজকারবার দেখে ভিরমি লেগে যাবে অনেকের। এই বয়সেই ও নিজের শরীরকে দুমড়ে-মুচড়ে নানা কসরত দেখাতে পারে। তাক লাগানোর মতো সেসব কসরত।

বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা শহরের তেল আল-হাওয়া এলাকার চার ফুট ছয় ইঞ্চি লম্বা ও ২৯ কিলোগ্রাম ওজনের মোহাম্মদ আল শেখ অসম্ভব সব শারীরিক কসরত দেখাতে পারে। নিজের পায়ের পাতা উল্টো দিক দিয়ে নিয়ে এসে কাঁধের ওপর নিতে পারে সে। নিজের শরীরকে কয়েক ভাঁজ করে রেখে দিতে পারে। এ ছাড়া উঠের পিঠে উঠে ‘স্পাইডারম্যানের’ মতো লাফাতেও পারে সে। আর এ কারণে ফিলিস্তিনের গাজাবাসী তাকে ‘স্পাইডারম্যান’ আখ্যাও দিয়েছে। ওই এলাকায় এখন সে তারকা। তবে এই তারকাখ্যাতি পেয়ে ক্ষান্ত নয় মোহাম্মদ, এখন সবাইকে তাক লাগানো শারীরিক কসরত দেখিয়ে নিজের নামটি সে লিখে নিতে চায় গিনেস বুকের পাতায়।

২০১৪ সালে হাজায় ইসরায়েলি হামলায় দুই সহস্রাধিক ফিলিস্তিনির প্রাণহানি হয়। এ সময় প্রায় ৫০ দিন প্রশিক্ষণ বন্ধ থাকে মোহাম্মদের। এই যুদ্ধাবস্থার মাঝেও লেবাননে ‘আরব গট ট্যালেন্ট’ নামে একটি টেলিভিশন শোতে অংশ নেয় সে। ওই শোতে শারীরিক কসরত দেখিয়ে সে পেয়েছিল ১ কোটি ৪০ লাখ ভোট। তবে শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি সে।
মোহাম্মদের প্রশিক্ষক মোহাম্মদ লুব্বাদ বলেন, পৃথিবীর যেকোনো অ্যাক্রোবেটিকের চেয়ে মোহাম্মদ চারটি কসরত এখনই বেশি দেখাতে পারে।

যে করেই হোক গিনেস বুকের পাতায় নিজের নামটি লেখাতেই হবে—মোহাম্মদ আল শেখের এখন এই একটাই স্বপ্ন। গিনেস কর্তৃপক্ষের কাছে একটি ভিডিওচিত্রসহ আবেদনও করেছে সে। তারা মোহাম্মদের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। মোহাম্মদ বুক মাটিতে ঠেকিয়ে পা উল্টো করে পেছন থেকে ঘাড়ের ওপর দিয়ে সামনের মেঝেতে ঠেকাতে পারে। সে তার পা ৩৬০ ডিগ্রি বাঁকিয়ে ঘোরাতে পারে। কফির টেবিলে বসে পা ঘাড়ের ওপর দিয়ে সামনে নিয়ে এসে সেই পা দিয়েই কফির মগ তুলে তা খেতেও পারে সে। এক মিনিটে সে ৩৩টি কসরত দেখাতে পারে। বর্তমানে গিনেস বুক রেকর্ডধারী ব্যক্তি মিনিটে ২৯টি কসরত দেখাতে পারেন। এ কারণে তার বিশ্বাস, সে গিনেস বুকে নিজের নাম লেখাতে পারবেই।

এই ‘স্পাইডারম্যানের’ মা হানান বলেন, সে এখনই ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন’। কিন্তু বিশ্ব প্রতিযোগিতায় সে আরও চোখধাঁধানো অসাধারণ কসরত দেখাতে পারে।

মোহাম্মদ আল শেখ জানায়, গাজায় ইসরায়েলিদের অবরোধ তার প্রশিক্ষণে বাধা হতে পারেনি। সে ইউটিউব দেখে দেখেও এসব শিখতে পারে। সমস্যা যা হচ্ছে তা হলো গাজার বাইরে গিয়ে সে নিজের এসব কসরত দেখাতে পারছে না।
‘আরব ও বিশ্বের অনেক মানুষ ফেসবুকে আমার এসব শারীরিক কসরতের ভিডিওচিত্রে লাইক দিয়ে আমাকে উৎসাহ দিচ্ছেন। কিন্তু এসব উৎসাহ আজ আমাকে কষ্ট দিচ্ছে। কারণ, অবরোধের কারণে আমি বিশ্বের অন্য কোনো প্রান্তে যেতে পারছি না। যাঁরা উৎসাহ দিচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না,’ কথাগুলো এভাবেই বলছিল ছোট্ট ‘স্পাইডারম্যান’।

প্রশিক্ষক মোহাম্মদ লুব্বাদ বলেন, লেবাননে ‘আরব গট ট্যালেন্ট’ শোতে অংশ নিয়ে সে ১০ বছর বিদেশে থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু ছোট্ট মোহাম্মদ বাবা-মাকে ছেড়ে একা দূর পরবাসে থাকতে পারবে না বলে তার পরিবার রাজি হয়নি।

(এসকে/মে ২৫, ২০১৬)

Comments

Popular posts from this blog

হিন্দুবিদ্বেষী ছিলেন না সম্রাট আওরঙ্গজেব

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক: মুঘল সম্রাটদের মধ্যে কেবল একজনই ভারতীয়দের মধ্যে স্থান করে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন - তিনি আলমগীর আওরঙ্গজেব। সাধারণ মানুষের মধ্যে আওরঙ্গজেবের ইমেজ হলো একজন ধর্মীয় গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবে , যিনি হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর যিনি নিজের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে এমনকি নিজের বড় ভাই দারা শিকোকে পর্যন্ত রেহাই দেননি। তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি বৃদ্ধ পিতাকে আগ্রার একটি দুর্গে তার জীবনের শেষ সাড়ে সাত বছর বন্দি করে রেখেছিলেন। সম্প্রতি পাকিস্তানী নাট্যকার শাহীদ নাদিম লিখেছেন যে ভারত ভাগের বীজ সত্যিকার অর্থে সেদিনই বপন করা হয়েছিল , যেদিন আওরঙ্গজেব তার ভাই দারাকে পরাজিত করেছিলেন। জওহরলাল নেহরুও ১৯৪৬ সালের প্রকাশিত তার বই ‘ ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া ’ তে আওরঙ্গজেবকে একজন গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন। তবে মার্কিন ইতিহাসবিদ অড্রে ট্রাশকা তার বই ‘ আওরঙ্গজেব - দ্যা ম্যান অ্যান্ড দ্যা মিথ ’ বইয়ে লিখেছেন যে আওরঙ্গজেব হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর তাই মন্দির ধ্বংস কর

দাঁড়িয়ে পানি পান কি ঠিক?

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক : সময় কিংবা অভ্যাসের কারণে আমরা অনেকেই দাঁড়িয়ে পানি পান করি। কিন্তু এই অভ্যাসের মাধ্যমে আমরা ডেকে আনছি বিপদ। একটা নয়, একগুচ্ছ রোগ বাসা বাঁধছে শরীরে। ভুগতে হচ্ছে কিডনি সমস্যায়। শরীরে পানির গুরুত্ব অনেক। কিন্তু ভুল নিয়মে পানি, বিশেষ করে রাস্তাঘাটে চলতে ফিরতে ঢকঢক করে পানি পানের অভ্যাসে শরীরে বাসা বাঁধছে নানা রোগ- এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। দাঁড়িয়ে পানি পানের কুফল শরীরে টক্সিনের পরিমাণ বাড়ে: পানি পানের পরেই শরীরের ছাঁকনিগুলো শরীরকে পরিশ্রুত করার কাজ শুরু করে। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরের ভিতরে থাকা ছাঁকনিগুলো সংকুচিত হয়ে যায়। পরিশ্রুত করার কাজ বাধা পায়। ফলে, শরীরে টক্সিনের মাত্রা বাড়তে থাকে। পাকস্থলীতে ক্ষত: দাঁড়িয়ে পানি পান করলে তা সরাসরি পাকস্থলীতে গিয়ে আঘাত করে। পাকস্থলী থেকে নিঃসৃত অ্যাসিডের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বদহজমের আশঙ্কা বাড়ে। তলপেটে যন্ত্রণাসহ একাধিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর্থারাইটিসের আশঙ্কা: দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরের মধ্যে থাকা কিছু উপকারী রাসায়নিকের মাত্রা কমতে থাকে। ফলে হাড়ের জোড়ায় কর্মক্ষমতা কমে যায়। সেখান থেকে আর্থারাইটিসের আশ

হরিণের রাজ্যে

শাহনেওয়াজ খান আমরা দশ-বারোজন মিলে চারদিক থেকে ঘিরে ধরলাম হরিণের পালটাকে। ৬০-৭০টা হরিণ হবে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ঘুরে ঘুরে পালটাকে ঘিরে ধরেছি। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসায় আলো দ্রুত কমে যাচ্ছে। শেষ সময়, সুতরাং সবাই চারদিক দিয়ে এক নিঃশ্বাসে দৌড় দিলাম হরিণের পালকে আটকাতে। কি অপূর্ব সেই দৃশ্য! আমার দু’পাশ দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে হরিণ। এত জোরে দৌড়াচ্ছে যে পায়ের নিচের খুড়ের অংশগুলো ঠিক স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। হরিণের ওপর ঝাঁপ দিয়ে পড়ার ইচ্ছেটা শুরুতেই তো বড় বড় শিং দেখে মারা গিয়েছিল। এখন দৌড় দেখে উল্টো চুপসে গেলাম। মনে মনে প্রার্থনা শুরু করলাম, হে আল্লাহ, শিং বা খুরের আঁচড় যেন গায়ে না লাগে। বর্ণনা শুনে মনে হচ্ছে, এটা সুন্দরবন বা বিদেশি কোনো সাফারি পার্কের দৃশ্য? না, এটা আমাদের গর্ব নিঝুম দ্বীপের গল্প। খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষগুলোর দ্বীপে যেখানে হরিণই চাঞ্চল্যের উৎস। তবে এই হরিণগুলো কিন্তু শুধু দ্বীপের পরিবেশকেই নয়, মানুষগুলোকেও ব্যস্ত রাখে। দল বেধে এসে নষ্ট করে দেয় ক্ষেতের ফসল। ২০০৯ সালের শুরুর দিকে শীত মৌসুমে গিয়েছিলাম নোয়াখালীর হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে। তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স