Skip to main content

দুই নেত্রীর চেয়েও বেশি দায়ী মধ্য সারির নেতারা: এবিএম মূসা



ঢাকা : প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মূসা বলেছেন, ‘দেশের গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলার জন্য দুই নেত্রীর চেয়েও বেশি দায়ী বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যম সারির নেতারা।বর্তমানে যারা এমপি হচ্ছেন তাদের একজনেরও কি ১৬ কোটি মানুষের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা আছে? বলে প্রশ্নও করেন তিনি।
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক আজকাল আয়োজিতদুই নেত্রীর ওপর দায় চাপিয়ে কি গণতন্ত্র রক্ষা হবে?’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘দুই নেত্রীর ওপর ভরসা করে কোন লাভ নেই। কারণ, দুই নেত্রীর কারোরই দেশ পরিচালনার প্রকৃত মেধা নেই। অতীতের মূর্তিপূজা বর্তমানে ব্যক্তিপূজায় পরিণত হয়েছে। দুই নেত্রীকে কারা বুদ্ধি দিচ্ছে তাদের খুঁজে বের করতে হবে। কারণ, জনগণ তাদের ক্ষমতায় আনেনি। দেশের রাজনৈতিক নেতারা যখন একমত হতে পারছিলো না তখন দিল্লি থেকে শেখ হাসিনা এবং ক্যান্টনমেন্ট থেকে খালেদা জিয়াকে নিয়ে আসা হয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, ‘টাকা দিয়ে জনগণকে কেনা যায় না। সাধারণ জনগণ ভোটের রাজনীতিতে কখনও ভুল করেনি। ৪৭ সালে পাকিস্তানকে ভোট দিয়েছিল তা ভুল ছিলনা।

বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের বাইরে তৃতীয় শক্তিকেও স্বাগত জানান তিনি।

ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের ওপর জোর দিয়ে কলামিস্ট আবুল মকসুদ আহমেদ বলেছেন, ‘দুই নেত্রীর ওপর দায় চাপিয়ে গণতন্ত্র রক্ষা হবে না। একটি রাজনৈতিক দল গণতন্ত্রের মাধ্যমে সরকার গঠন করে অনেক নেতার সমন্বয়ে। দুই নেত্রীর পাশাপশি এমপি মন্ত্রীরাও দায়ী। কারণ যথেষ্ট পরিমাণ ব্যক্তিত্বের অভাবে প্রতিবাদ করতে জানে না তারা।    

তৃতীয় শক্তির ওপর জোর দিয়ে বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেছেন, ‘তৃতীয় শক্তি তৈরি না হলে বারবার দুই নেত্রীর কাছে ফিরে যেতে হবে। তবে তৃতীয় শক্তি বলতে অরাজনৈতিক বা অপরাজনৈতিক নয়, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলকেই তৃতীয় শক্তির ভার নিতে হবে।

ঢাবি আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘এরশাদের শাসন আমলের চেয়েও গণতান্ত্রিক সরকারের সময় দেশ খারাপ অবস্থায় চলে গেছে। খালেদা জিয়ার শাসন আমলে শুরু হয়েছিলক্রসফায়ারআর শেখ হাসিনার আমলেগুম অন্যদিকে এই গণতান্ত্রিক শাসন আমলে সংবিধান লঙ্ঘিত হয়নি তবে এমনভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে যে, এর বিরুদ্ধে কথা বললে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা খেতে হয়।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না দেশের গণতন্ত্র হুমকির জন্য দুই নেত্রীকে দায়ি করে বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪১ বছর পরেও আমাদের দেশে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তাস্তর হয় না। অন্যান্য বক্তাদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে পুরাতন দলের মধ্যে থেকেই দক্ষ নেতৃত্ব বের করার পক্ষে মত দেন তিনি।

ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের ওপর জোর দিয়ে গোলাম মওলা রনি এমপি বলেন, ‘রাজনৈতিক পদ্ধতির কারণে আমরা জাতি হিসেবে পিছিয়ে যাচ্ছি। যতদিন এই পদ্ধতির পরিবর্তন না হবে ততদিন গণতন্ত্রের সংকট দূর হবে না।

সাপ্তাহিক আজকাল পত্রিকার উপদেষ্টা গোলাম মর্তুজার সঞ্চালনা এবং প্রধান সম্পাদক জাকারিয়া মাসুদ জিকু গোলটেবিল বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন।

(এসটি/এসকে/২৬.১২.১২)

Comments

Popular posts from this blog

হিন্দুবিদ্বেষী ছিলেন না সম্রাট আওরঙ্গজেব

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক: মুঘল সম্রাটদের মধ্যে কেবল একজনই ভারতীয়দের মধ্যে স্থান করে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন - তিনি আলমগীর আওরঙ্গজেব। সাধারণ মানুষের মধ্যে আওরঙ্গজেবের ইমেজ হলো একজন ধর্মীয় গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবে , যিনি হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর যিনি নিজের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে এমনকি নিজের বড় ভাই দারা শিকোকে পর্যন্ত রেহাই দেননি। তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি বৃদ্ধ পিতাকে আগ্রার একটি দুর্গে তার জীবনের শেষ সাড়ে সাত বছর বন্দি করে রেখেছিলেন। সম্প্রতি পাকিস্তানী নাট্যকার শাহীদ নাদিম লিখেছেন যে ভারত ভাগের বীজ সত্যিকার অর্থে সেদিনই বপন করা হয়েছিল , যেদিন আওরঙ্গজেব তার ভাই দারাকে পরাজিত করেছিলেন। জওহরলাল নেহরুও ১৯৪৬ সালের প্রকাশিত তার বই ‘ ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া ’ তে আওরঙ্গজেবকে একজন গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন। তবে মার্কিন ইতিহাসবিদ অড্রে ট্রাশকা তার বই ‘ আওরঙ্গজেব - দ্যা ম্যান অ্যান্ড দ্যা মিথ ’ বইয়ে লিখেছেন যে আওরঙ্গজেব হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর তাই মন্দির ধ্বংস কর

দাঁড়িয়ে পানি পান কি ঠিক?

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক : সময় কিংবা অভ্যাসের কারণে আমরা অনেকেই দাঁড়িয়ে পানি পান করি। কিন্তু এই অভ্যাসের মাধ্যমে আমরা ডেকে আনছি বিপদ। একটা নয়, একগুচ্ছ রোগ বাসা বাঁধছে শরীরে। ভুগতে হচ্ছে কিডনি সমস্যায়। শরীরে পানির গুরুত্ব অনেক। কিন্তু ভুল নিয়মে পানি, বিশেষ করে রাস্তাঘাটে চলতে ফিরতে ঢকঢক করে পানি পানের অভ্যাসে শরীরে বাসা বাঁধছে নানা রোগ- এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। দাঁড়িয়ে পানি পানের কুফল শরীরে টক্সিনের পরিমাণ বাড়ে: পানি পানের পরেই শরীরের ছাঁকনিগুলো শরীরকে পরিশ্রুত করার কাজ শুরু করে। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরের ভিতরে থাকা ছাঁকনিগুলো সংকুচিত হয়ে যায়। পরিশ্রুত করার কাজ বাধা পায়। ফলে, শরীরে টক্সিনের মাত্রা বাড়তে থাকে। পাকস্থলীতে ক্ষত: দাঁড়িয়ে পানি পান করলে তা সরাসরি পাকস্থলীতে গিয়ে আঘাত করে। পাকস্থলী থেকে নিঃসৃত অ্যাসিডের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বদহজমের আশঙ্কা বাড়ে। তলপেটে যন্ত্রণাসহ একাধিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর্থারাইটিসের আশঙ্কা: দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরের মধ্যে থাকা কিছু উপকারী রাসায়নিকের মাত্রা কমতে থাকে। ফলে হাড়ের জোড়ায় কর্মক্ষমতা কমে যায়। সেখান থেকে আর্থারাইটিসের আশ

হরিণের রাজ্যে

শাহনেওয়াজ খান আমরা দশ-বারোজন মিলে চারদিক থেকে ঘিরে ধরলাম হরিণের পালটাকে। ৬০-৭০টা হরিণ হবে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ঘুরে ঘুরে পালটাকে ঘিরে ধরেছি। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসায় আলো দ্রুত কমে যাচ্ছে। শেষ সময়, সুতরাং সবাই চারদিক দিয়ে এক নিঃশ্বাসে দৌড় দিলাম হরিণের পালকে আটকাতে। কি অপূর্ব সেই দৃশ্য! আমার দু’পাশ দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে হরিণ। এত জোরে দৌড়াচ্ছে যে পায়ের নিচের খুড়ের অংশগুলো ঠিক স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। হরিণের ওপর ঝাঁপ দিয়ে পড়ার ইচ্ছেটা শুরুতেই তো বড় বড় শিং দেখে মারা গিয়েছিল। এখন দৌড় দেখে উল্টো চুপসে গেলাম। মনে মনে প্রার্থনা শুরু করলাম, হে আল্লাহ, শিং বা খুরের আঁচড় যেন গায়ে না লাগে। বর্ণনা শুনে মনে হচ্ছে, এটা সুন্দরবন বা বিদেশি কোনো সাফারি পার্কের দৃশ্য? না, এটা আমাদের গর্ব নিঝুম দ্বীপের গল্প। খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষগুলোর দ্বীপে যেখানে হরিণই চাঞ্চল্যের উৎস। তবে এই হরিণগুলো কিন্তু শুধু দ্বীপের পরিবেশকেই নয়, মানুষগুলোকেও ব্যস্ত রাখে। দল বেধে এসে নষ্ট করে দেয় ক্ষেতের ফসল। ২০০৯ সালের শুরুর দিকে শীত মৌসুমে গিয়েছিলাম নোয়াখালীর হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে। তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স