Skip to main content

নীল নেত্রকোণা


শাহনেওয়াজ খান


আকাশের নীল দেখেছি। দেখেছি সমুদ্রের নীল জলরাশি। প্রকৃতিতে নীলের ছড়াছড়ি দেখছি অহরহ। তারপরও নদীর নীলরূপ দেখার অদম্য আকর্ষণে ছুটে গেছি। শুধু নীল নয়, স্বচ্ছ নীল পানি। যার মধ্য দিয়ে দেখা যায় নদীর নিচ পর্যন্ত! এমন নীলরূপ কে না দেখতে চায়।

ভ্রমণ সঙ্গী বড় ভাই ওয়াহিদ সুজন আমাকে নদীর নীলরূপের গল্প শুনিয়েছেন। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে চলে গেলাম নেত্রকোণা জেলার বিরিশিরিতে। দুপুরের কড়া রোদের মাঝে বিরিশিরি পৌঁছে তর সইছিল না, কখন যাব সোমেশ্বরী নদীর পাড়ে। স্থানীয় একটি গেস্ট হাউজে উঠে দ্রুত গোসল সেরে বিকেলেই ছুটে গেলাম সোমেশ্বরীর তীরে। স্বচ্ছ নীল পানির অপূর্ব রূপ দেখব। কিন্তু কোথায় যেন একটা গোলমাল হয়ে গেল। ছোট নদীটি পানিতে ভরপুর। কিন্তু নীল পানি কই?

শান্ত নদীর যেদিকে তাকাই ঘোলাটে পানিই চোখে পড়ল। ভগ্ন হৃদয় নিয়ে তাকালাম উনার দিকে। তিনি স্মিত হেসে বললেন, আমরাও প্রথম যেদিন এসেছিলাম তখন বিকাল ছিল। তখনও এমন ঘোলাটে পানি দেখেছি। পরদিন সেই নীলরূপ দেখতে পেয়েছিলাম।

‘আশায় বসতি, আশায় ঘর
আশায় আপন, আশায় পর।’

এক বুক আশা নিয়ে সে দিনের মতো ঘুমাতে গেলাম। সকালে উঠেই আবার ছুট। সোমেশ্বরীর উপর দিয়ে ট্রলারযোগে পার হলাম। কিনারা ঘেঁষে করলাম মোটরসাইকেল ভ্রমণ। উঠলাম বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) ক্যাম্পের টিলায়। কিন্তু কোথায় সেই নীলরূপ। হায়, আমি তো চারদিকে শুধু ঘোলা পানিই দেখছি! আমার চোখ ভুল দেখছে না তো। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিশ্চিত হলাম, না আমি নই, সবাই ঘোলা পানিই দেখছে। সঙ্গী ভাইজান বললেন, এমন তো হওয়ার কথা নয়। এর আগে আমরা নীল পানিই তো দেখেছিলাম। কথাটা আগে থেকেই মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিল। ওই সময় তা মুখ ফসকে বেরিয়েই গেল- পানি নয়, চাপার রং নীল।

আমাদের বহনকারী মোটরসাইকেল চালক জানালেন, শীতকালে ক্ষীণকায় সোমেশ্বরীর ওই নীলরূপ থাকে। এবার বড় ভাই মনে হয় প্রাণ ফিরে পেলেন। বললেন, হ্যাঁ, আমরা তো আগেরবার শীতকালেই এসেছিলাম। (পরে অবশ্য অনেক প্রত্যক্ষদর্শীর কাছে শুনেছি, শীতকালে সত্যিই সোমেশ্বরীর পানি স্বচ্ছ নীলরূপ ধারণ করে।) আফসোস হতে লাগল, কেন যে ভরা বর্ষায় নদী দেখতে এলাম!

বিরিশিরিতে এসে কি তবে নীলরঙা পানি না দেখেই ফিরে যাব? না প্রকৃতি এতটা নির্দয় হল না। নীল পানির দেখা অবশেষে মিলল। তবে সেটা নদীতে নয়, চিনামাটির পাহাড়ের মাঝে। এখানে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা ভেদাভেদ নেই, সবসময়ই একই রং। সাদা রঙের চীনামাটির পাহাড় কেটে মাটি নিয়ে যাচ্ছে টাইলস বানাতে। সেই মাটি কাটার বিশাল গর্তে সৃষ্টি হয় আবদ্ধ জলাশয়ের। চারদিকে চীনামাটিতে ঘেরা ওই জলাশয়গুলোর পানির রং সবুজাভ-নীল। সূর্যের আলোর তারতম্যে তা কখনও নীল, আবার কখনও সবুজ রং ধারণ করে। স্বচক্ষে না দেখলে কখানো বিশ্বাসই করতাম না পানির রং এমন সুন্দর হয়।

পানির মতো ঢেউ খেলানো মাটির রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেলে চড়ে আসতে শরীরের হাড়-গোড় এক করে আর ধুলা খেয়ে যে কষ্ট হয়েছিল তা এক নিমিষেই উড়ে গেল ওই রঙিন পানি দেখে। ভর দুপুরের কড়া রৌদ্র উপেক্ষা করে ছুটলাম পাহাড়ের মাঝে।

পানির ওই সৌন্দর্যই নয়, পাহাড়ে অবস্থিত কমলা বাগানও ছিল দেখার মতো। আর দোল দোল দুলুনি ব্রিজের (নিজের দেওয়া নাম) কথা না বললেই নয়। বিরিশিরি থেকে দূর্গাপুর বাজারের মাঝে সোমেশ্বরীর উপরে নির্মিত কংক্রিটের ব্রিজটি দিয়ে কোনো ট্রাক চলে যাওয়ার সময় তা দুলতে থাকে। এ সময় ‘দোল দোল দুলুনি’ গানটি মনে পড়ার পাশাপাশি বেশ মজাও লাগে!

পরের দিন বিরিশিরি থেকে চলে আসলাম নেত্রকোণা শহরে। পৌঁছুতে রাত হলেও সহকর্মীর পরিচিত এক ব্যক্তির কল্যাণে হোটেল পেতে মোটেও সমস্যা হল না। রেলস্টেশনের ঠিক পাশেই এক হোটেলে উঠলাম। সুবিধাজনক স্থানই হলো! সকালে এই স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে মোহনগঞ্জ যাওয়া যাবে।

হোটেল আর মোহনগঞ্জ যাত্রার বিষয়টি নিশ্চিত করে বেরুলাম শহর ঘুরতে। ঘোরা-ফেরা শেষে রাতে বেশ নিশ্চিন্তেই ঘুমালাম। নিশ্চিন্ত এ কারণে যে, খবর পেলাম সকাল সাড়ে ৮টায় স্টেশন থেকে মোহনগঞ্জগামী ট্রেনটি ছাড়বে।

সুতরাং নিশ্চিন্তে ঘুম। এতটাই নিশ্চিন্ত যে, সকালে উঠেও সেই নিশ্চিন্তের ঘোর কাটছে না। বেশ আয়েশি ভঙ্গিতে সকাল ৮টার দিকে হাত-মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হতে যাওয়া। মাঝে ট্রেনের আওয়াজ শুনলাম। ওহ, তাহলে হয়ত ট্রেন এসেছে। আরেকটু বিশ্রাম নিয়ে হেলে-দুলে স্টেশনে গিয়ে পৌঁছলাম ৮টা ৩৫ মিনিটে। কোথায় ট্রেন, স্টেশন তো ফাঁকা! টিকিট কাউন্টারে গিয়ে শুনলাম, মোহনগঞ্জের ট্রেন ৮টার সময়ই ছেড়ে গেছে। প্রবাদ আছে, মক্কার লোক নাকি হজ পায় না! আমাদের অবস্থাও অনেকটা তাই।

আমি আর সুজন ভাই দু্জনেই দুজনের দিকে হাসিমুখে তাকালাম। হয়ত দুজনের মুখেই ছিল তৃপ্তির অভিব্যক্তি! কারণ, দোষ কারও একার নয়, দুজনেরই। কিন্তু আমি ভাবছি অন্য কথা, আমার সব সময় দেরি হয় ঠিক। তবে শেষ সময়ে কষ্ট করে হলেও সব ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রায় ঠিকই পৌঁছে যাই। অথচ এবার...

স্টেশন ছেড়ে গেলাম বাসস্ট্যান্ডে। বাস ছাড়বে সাড়ে ৯টায়। অপেক্ষার পাশাপাশি সকালের নাস্তাটাও সেরে নিলাম। বৃষ্টিস্নাত দিনে এক ঘণ্টা কয়েক মিনিট ভ্রমণের পর মোহনগঞ্জ উপজেলায় নামলাম। সেখানে পূর্ব পরিচিত ফয়সাল আমাদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য প্রস্তুত ছিল। উঠলাম উপজেলা ডাকবাংলোয়।

দুপুরেই ওই দিন রাতে ঢাকা ফেরার বাসের টিকিট কেটে ফেললাম। এবার একটাই কাজ- হাওড় অভিযান। একটানা মুষলধারে বৃষ্টি। অগত্য বসে থাকতে হল বাস কাউন্টারেই। বৃষ্টি থামার লক্ষ্মণ দেখতে না পেয়ে বেশ খানিক সময় পর বেরুলাম। পূর্ব পরিচিত দুই বাড়িতে বেড়ানোর পর বিকেলে গেলাম হাওড় এলাকায়। উদ্দেশ্য জৈনপুর।

ট্রলারঘাটে গিয়ে শুনলাম জৈনপুর থেকে রাতেও ট্রলার ছেড়ে আসে। কেউ কেউ রাত ৮টা পর্যন্ত ট্রলার পাওয়ার কথা বললেও কেউ আবার আরেক ধাপ এগিয়ে রাত ১২টার কথাও বলল। যাক স্থানীয়দের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ট্রলারে উঠলাম। হাওড়ের উপর দিয়ে ট্রলার ভ্রমণ করতে ভালই লাগছিল। কিন্তু সুখ জিনিসটাই মনে হয় ক্ষণস্থায়ী। ভরপুর হাওরে পানির ঢেউ, পানির মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা গাছ, সবুজ ঘাস ভরা মাঠসহ নানা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে যখন আপ্লুত হচ্ছিলাম তখনই দুঃখের আবির্ভাব।

জৈনপুরের উকিল মুন্সী বাজারের কাছে এসে পূর্বে প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতাকে আঘাত হেনে নতুন তথ্য দিলেন ট্রলারমালিক। এটাই নাকি জৈনপুরের শেষ ট্রিপ! এরপর আর কোনো ট্রলার এখান থেকে যাবে না। বাহ! ট্রলারে উঠার সময় যিনি ফিরতি ট্রলারের কথা শুনালেন তার মুখেই কি অসাধারণ বচন!

সংশয় নিয়েই পৌঁছলাম উকিল মুন্সীর বাড়ি। কথা বলা শেষে এবার ফেরার পালা। বাইরে অবিরাম বৃষ্টি। ট্রলারেরও আশা নেই। অথচ আমাদের ফিরতে হবে। রাতে বাস, অফিসের ছুটি শেষ... নানা চিন্তার মাঝে চলতে ছিল ট্রলার খোঁজার পর্ব। স্থানীয়রা অনেক চেষ্টা করলেন, কিন্তু কিছুতেই ট্রলারের ব্যবস্থা করা যাচ্ছিল না। এরই মাঝে এক ঘরে আমাদের জন্য রাতের খাবারের ব্যবস্থা করা হল। খেতে বসলাম। স্থানীয়দের মাধ্যমে ওই এলাকার চেয়ারম্যানের মোবাইল নাম্বার নিয়ে তাকে ফোন দিয়ে ঘটনা খুলে বললাম। তিনি তার বাসায় (তার গ্রামের বাড়ি হলেও সেখানে তিনি থাকেন না) থাকার ব্যবস্থা করলেন। চেয়ারম্যানের চাচাত ভাই আমাদের থাকার যাবতীয় বন্দোবস্ত করলেন। অফিসে ফোন দিয়ে ছুটি বাড়ানোর পাশাপাশি বাসের টিকিটও বাতিল করে পরবর্তী দিনেরটা নিশ্চিত করা হলো।

সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলাম খাবার প্রস্তুত। পুকুর থেকে ধরে আনা বেশ কয়েক ধরনের মাছের তরকারি। খাওয়া সেরে সহকর্মী সুজন ভাইয়ের তথ্য সংগ্রহের কাজের পাশাপাশি হাওড়াঞ্চল ছাড়ার জন্য বের হলাম। আসলাম উকিল মুন্সী বাজারে। তথ্য সংগ্রহের চেয়ে সেখানকার মানুষদের সঙ্গে আড্ডাটাই বেশি জমে উঠল। তবে এর মাঝে আকাশের অবস্থা দেখে বেশ কয়েকবার সংশয় প্রকাশ করলাম। যে কোনো মুহূর্তেই অঝোরে বৃষ্টি নামতে পারে।

আশঙ্কা সত্যি করে বৃষ্টি এল। ঠিক অঝোরেই। আবারও সংশয়ের কালো মেঘ। বৃষ্টি হালকা কমলেই স্থানীয়রা ট্রলারের ব্যবস্থা করে দিলেন। ট্রলারে উঠার পর আবারও বৃষ্টি। হাওড় থেকে আসা ট্রলারগুলো হাওড়ের দিকে যেতে বারণ করতে ছিল। প্রবল ঢেউ বইছে। যে কোনো মুহূর্তে ট্রলারডুবির আশঙ্কা। আমাদের পিছু হটার উপায় নেই। অফিসে বসে যে দুর্ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হয় সে রকমই হয়ত এবার আমাদের নিয়ে অন্য কেউ করবে! তবুও এগুনো ছাড়া পথ নেই। এ দিন ঢাকায় ফিরতেই হবে। আর ঝড়ো আবহাওয়ার মাঝে হাওড়ের উপর দিয়ে চলার অভিজ্ঞতাও কম কিসে? হাওড়ের এ চেহারা না দেখলে তো হাওড় অভিযান অপূর্ণই থেকে যাবে।

বড় বড় ঢেউ, শরীরে ছিটকে আসছে পানি। ট্রলার একবার উপরে উঠছে আবার নিচে নামছে। অ্যামিউজমেন্ট পার্কের রাউডগুলোর কথা মনে পড়ে গেল। মনে হল টিকিট ছাড়াই রাইডে চড়ছি!

অবশেষে হাওরের তীর ঘেঁষে ঘাটে এসে পৌঁছলাম। এরপর বেশ ভালভাবেই মোহনগঞ্জ উপজেলা সদরে আসলাম। কোনো রকম অঘটন ছাড়াই রাতের বাসে নেত্রকোণাও ছাড়লাম। কিন্তু দুর্ভোগ মনে হয় তখনও আমাদের সাথেই আসছিল। রাতে আমাদের পাশাপাশি দুর্ভোগও কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে ভোরেই আবার তার কাজে নামল। গাজীপুর এসে টানা ৪-৫ ঘণ্টা গাড়ি ২-৪ কিলোমিটারের মধ্যেই থেমে থাকল। ভয়াবহ জ্যাম। সকাল ৮টায় অফিসে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কি আর করব। নিউজ এডিটর মজনু ভাইকে ফোন দিলাম। ভাই রাস্তায় এ অবস্থা... বিকেলে আসি? তিনি সম্মতি দিতেই জ্যামের মাঝেই কিছুটা স্বস্তি বোধ করলাম। আরেকটু স্বস্তি পেয়েছিলাম বাড়িতে পৌঁছে।

ওহ, আসল কথাটা বলতে তো ভুলেই গেছি। এই দুর্ভোগের পরও কিন্তু ভ্রমণটা খারাপ লাগেনি। নতুন অভিজ্ঞতার পাশাপাশি প্রকৃতির রূপ কি খারাপ লাগার মতো? প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর ঘুরার আনন্দ সব দুর্ভোগকেই ছাপিয়ে যায়।

Comments

Popular posts from this blog

হিন্দুবিদ্বেষী ছিলেন না সম্রাট আওরঙ্গজেব

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক: মুঘল সম্রাটদের মধ্যে কেবল একজনই ভারতীয়দের মধ্যে স্থান করে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন - তিনি আলমগীর আওরঙ্গজেব। সাধারণ মানুষের মধ্যে আওরঙ্গজেবের ইমেজ হলো একজন ধর্মীয় গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবে , যিনি হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর যিনি নিজের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে এমনকি নিজের বড় ভাই দারা শিকোকে পর্যন্ত রেহাই দেননি। তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি বৃদ্ধ পিতাকে আগ্রার একটি দুর্গে তার জীবনের শেষ সাড়ে সাত বছর বন্দি করে রেখেছিলেন। সম্প্রতি পাকিস্তানী নাট্যকার শাহীদ নাদিম লিখেছেন যে ভারত ভাগের বীজ সত্যিকার অর্থে সেদিনই বপন করা হয়েছিল , যেদিন আওরঙ্গজেব তার ভাই দারাকে পরাজিত করেছিলেন। জওহরলাল নেহরুও ১৯৪৬ সালের প্রকাশিত তার বই ‘ ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া ’ তে আওরঙ্গজেবকে একজন গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন। তবে মার্কিন ইতিহাসবিদ অড্রে ট্রাশকা তার বই ‘ আওরঙ্গজেব - দ্যা ম্যান অ্যান্ড দ্যা মিথ ’ বইয়ে লিখেছেন যে আওরঙ্গজেব হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর তাই মন্দির ধ্বংস কর

দাঁড়িয়ে পানি পান কি ঠিক?

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক : সময় কিংবা অভ্যাসের কারণে আমরা অনেকেই দাঁড়িয়ে পানি পান করি। কিন্তু এই অভ্যাসের মাধ্যমে আমরা ডেকে আনছি বিপদ। একটা নয়, একগুচ্ছ রোগ বাসা বাঁধছে শরীরে। ভুগতে হচ্ছে কিডনি সমস্যায়। শরীরে পানির গুরুত্ব অনেক। কিন্তু ভুল নিয়মে পানি, বিশেষ করে রাস্তাঘাটে চলতে ফিরতে ঢকঢক করে পানি পানের অভ্যাসে শরীরে বাসা বাঁধছে নানা রোগ- এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। দাঁড়িয়ে পানি পানের কুফল শরীরে টক্সিনের পরিমাণ বাড়ে: পানি পানের পরেই শরীরের ছাঁকনিগুলো শরীরকে পরিশ্রুত করার কাজ শুরু করে। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরের ভিতরে থাকা ছাঁকনিগুলো সংকুচিত হয়ে যায়। পরিশ্রুত করার কাজ বাধা পায়। ফলে, শরীরে টক্সিনের মাত্রা বাড়তে থাকে। পাকস্থলীতে ক্ষত: দাঁড়িয়ে পানি পান করলে তা সরাসরি পাকস্থলীতে গিয়ে আঘাত করে। পাকস্থলী থেকে নিঃসৃত অ্যাসিডের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বদহজমের আশঙ্কা বাড়ে। তলপেটে যন্ত্রণাসহ একাধিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর্থারাইটিসের আশঙ্কা: দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরের মধ্যে থাকা কিছু উপকারী রাসায়নিকের মাত্রা কমতে থাকে। ফলে হাড়ের জোড়ায় কর্মক্ষমতা কমে যায়। সেখান থেকে আর্থারাইটিসের আশ

হরিণের রাজ্যে

শাহনেওয়াজ খান আমরা দশ-বারোজন মিলে চারদিক থেকে ঘিরে ধরলাম হরিণের পালটাকে। ৬০-৭০টা হরিণ হবে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ঘুরে ঘুরে পালটাকে ঘিরে ধরেছি। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসায় আলো দ্রুত কমে যাচ্ছে। শেষ সময়, সুতরাং সবাই চারদিক দিয়ে এক নিঃশ্বাসে দৌড় দিলাম হরিণের পালকে আটকাতে। কি অপূর্ব সেই দৃশ্য! আমার দু’পাশ দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে হরিণ। এত জোরে দৌড়াচ্ছে যে পায়ের নিচের খুড়ের অংশগুলো ঠিক স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। হরিণের ওপর ঝাঁপ দিয়ে পড়ার ইচ্ছেটা শুরুতেই তো বড় বড় শিং দেখে মারা গিয়েছিল। এখন দৌড় দেখে উল্টো চুপসে গেলাম। মনে মনে প্রার্থনা শুরু করলাম, হে আল্লাহ, শিং বা খুরের আঁচড় যেন গায়ে না লাগে। বর্ণনা শুনে মনে হচ্ছে, এটা সুন্দরবন বা বিদেশি কোনো সাফারি পার্কের দৃশ্য? না, এটা আমাদের গর্ব নিঝুম দ্বীপের গল্প। খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষগুলোর দ্বীপে যেখানে হরিণই চাঞ্চল্যের উৎস। তবে এই হরিণগুলো কিন্তু শুধু দ্বীপের পরিবেশকেই নয়, মানুষগুলোকেও ব্যস্ত রাখে। দল বেধে এসে নষ্ট করে দেয় ক্ষেতের ফসল। ২০০৯ সালের শুরুর দিকে শীত মৌসুমে গিয়েছিলাম নোয়াখালীর হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে। তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স