Skip to main content

সন্ত্রাসী হামলার চেয়ে কুকুরের কামড়ে বেশি মৃত্যু!




নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক : গত ২০ বছরে ভারতের মুম্বাইয়ে কুকুরের কামড়ে যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে তার সংখ্যা শহরটিতে বড় দুটি সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির সংখ্যার চেয়ে বেশি। মুম্বাইয়ে কুকুরের কামড়জনিত মৃত্যু নিয়ে গত বুধবার সুপ্রিম কোর্টে এমন ভয়াবহ পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেছে ব্রিহানমুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (বিএমসি)।
এই প্রেক্ষাপটে উন্মত্ত কুকুরকে প্রজননে অক্ষম করা এবং ভ্যাক্সিন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

কর্পোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত মুম্বাইয়ে কুকুরের কামড়ের কারণে জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়ে সর্বমোট ৪২৯ জন মানুষের মৃত্যু হয়। একই সময়ের মধ্যে কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছেন ১৩ লাখ ১২ হাজার মানুষ।
মুম্বাইয়ের সবচেয়ে বড় দুটি সন্ত্রাসী হামলার ক্ষেত্রে দেখা যায়, ১৯৯৩ সালে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় ২৫৭ জনের মৃত্যু হয় এবং ৭১৭ জন আহত হন। আর ২০০৮ সালে মুম্বাইয়ের তাজ হোটেলে হামলার ঘটনায় নিহত হন ১৬৪ জন; আহত হন আরও ৩০৮ জন। এ দুটি হামলার ঘটনায় একত্রিত করলে দেখা যায়, প্রাণহানির সংখ্যা ৪২১, যা কুকুরের কামড়ে মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে কম।

উন্মত্ত কিংবা বিপদগামী কুকুর হত্যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যেসব এনজিও আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন তাদের আক্রমণ করে বসেন বিএমসি’র পক্ষের আইনজীবী শেখর নাপহাদে। বিচারপতি দিপক মিসরা এবং পি সি পান্তকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চকে শেখর বলেন, “এনজিওগুলো কেবল আদালতেই শোরগোল করতে পারে। প্রতি বছর, মুম্বাইয়ের একটি বিশাল সংখ্যক মানুষ কুকুরের কামড়ে মারা যায়। যখনই আমরা কুকুর নির্মূল করতে যাই তখনই পশুপ্রেমীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। সঙ্কট সমাধানে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ তারা নিতে পারেন না। সমস্যা সমাধানে মাঠ পর্যায়ে এনজিওগুলো কী কাজ করেছে তার ব্যাখ্যা চেয়ে এনজিওগুলোকে আদালতে ডাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।”

কেরালায় কুকুরের কামড়ে দিনমজুর স্বামী মারা গেছেন এমন এক অসহায় নারীকে আদালতের সামনে হাজির করে আইনজীবী ভি কে বিজু বলেন, “নাগরিক সমাজ নাকি রাজ্য সরকার এ নারীকে ক্ষতিপূরণ দেবে-তা সুপ্রিম কোর্টকেই ঠিক করে দিতে হবে। যখন কুকুরের কামড়ে শিমুরা মারা যায় তখন কি এনজিওগুলো বিক্ষোভ করে? ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে কি এনজিওগুলো ক্ষতিপূরণ দেয়?”

এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে শেখরের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে আদালতের তরফে আইন মেনে উন্মত্ত কুকুরকে প্রজনন অক্ষম করা এবং ভ্যাক্সিন দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। সেই সঙ্গে এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করতে এনজিওগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া

(এসকে/মার্চ ১১, ২০১৬)

Comments

Popular posts from this blog

হিন্দুবিদ্বেষী ছিলেন না সম্রাট আওরঙ্গজেব

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক: মুঘল সম্রাটদের মধ্যে কেবল একজনই ভারতীয়দের মধ্যে স্থান করে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন - তিনি আলমগীর আওরঙ্গজেব। সাধারণ মানুষের মধ্যে আওরঙ্গজেবের ইমেজ হলো একজন ধর্মীয় গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবে , যিনি হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর যিনি নিজের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে এমনকি নিজের বড় ভাই দারা শিকোকে পর্যন্ত রেহাই দেননি। তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি বৃদ্ধ পিতাকে আগ্রার একটি দুর্গে তার জীবনের শেষ সাড়ে সাত বছর বন্দি করে রেখেছিলেন। সম্প্রতি পাকিস্তানী নাট্যকার শাহীদ নাদিম লিখেছেন যে ভারত ভাগের বীজ সত্যিকার অর্থে সেদিনই বপন করা হয়েছিল , যেদিন আওরঙ্গজেব তার ভাই দারাকে পরাজিত করেছিলেন। জওহরলাল নেহরুও ১৯৪৬ সালের প্রকাশিত তার বই ‘ ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া ’ তে আওরঙ্গজেবকে একজন গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন। তবে মার্কিন ইতিহাসবিদ অড্রে ট্রাশকা তার বই ‘ আওরঙ্গজেব - দ্যা ম্যান অ্যান্ড দ্যা মিথ ’ বইয়ে লিখেছেন যে আওরঙ্গজেব হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর তাই মন্দির ধ্বংস কর

দাঁড়িয়ে পানি পান কি ঠিক?

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক : সময় কিংবা অভ্যাসের কারণে আমরা অনেকেই দাঁড়িয়ে পানি পান করি। কিন্তু এই অভ্যাসের মাধ্যমে আমরা ডেকে আনছি বিপদ। একটা নয়, একগুচ্ছ রোগ বাসা বাঁধছে শরীরে। ভুগতে হচ্ছে কিডনি সমস্যায়। শরীরে পানির গুরুত্ব অনেক। কিন্তু ভুল নিয়মে পানি, বিশেষ করে রাস্তাঘাটে চলতে ফিরতে ঢকঢক করে পানি পানের অভ্যাসে শরীরে বাসা বাঁধছে নানা রোগ- এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। দাঁড়িয়ে পানি পানের কুফল শরীরে টক্সিনের পরিমাণ বাড়ে: পানি পানের পরেই শরীরের ছাঁকনিগুলো শরীরকে পরিশ্রুত করার কাজ শুরু করে। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরের ভিতরে থাকা ছাঁকনিগুলো সংকুচিত হয়ে যায়। পরিশ্রুত করার কাজ বাধা পায়। ফলে, শরীরে টক্সিনের মাত্রা বাড়তে থাকে। পাকস্থলীতে ক্ষত: দাঁড়িয়ে পানি পান করলে তা সরাসরি পাকস্থলীতে গিয়ে আঘাত করে। পাকস্থলী থেকে নিঃসৃত অ্যাসিডের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বদহজমের আশঙ্কা বাড়ে। তলপেটে যন্ত্রণাসহ একাধিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর্থারাইটিসের আশঙ্কা: দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরের মধ্যে থাকা কিছু উপকারী রাসায়নিকের মাত্রা কমতে থাকে। ফলে হাড়ের জোড়ায় কর্মক্ষমতা কমে যায়। সেখান থেকে আর্থারাইটিসের আশ

হরিণের রাজ্যে

শাহনেওয়াজ খান আমরা দশ-বারোজন মিলে চারদিক থেকে ঘিরে ধরলাম হরিণের পালটাকে। ৬০-৭০টা হরিণ হবে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ঘুরে ঘুরে পালটাকে ঘিরে ধরেছি। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসায় আলো দ্রুত কমে যাচ্ছে। শেষ সময়, সুতরাং সবাই চারদিক দিয়ে এক নিঃশ্বাসে দৌড় দিলাম হরিণের পালকে আটকাতে। কি অপূর্ব সেই দৃশ্য! আমার দু’পাশ দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে হরিণ। এত জোরে দৌড়াচ্ছে যে পায়ের নিচের খুড়ের অংশগুলো ঠিক স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। হরিণের ওপর ঝাঁপ দিয়ে পড়ার ইচ্ছেটা শুরুতেই তো বড় বড় শিং দেখে মারা গিয়েছিল। এখন দৌড় দেখে উল্টো চুপসে গেলাম। মনে মনে প্রার্থনা শুরু করলাম, হে আল্লাহ, শিং বা খুরের আঁচড় যেন গায়ে না লাগে। বর্ণনা শুনে মনে হচ্ছে, এটা সুন্দরবন বা বিদেশি কোনো সাফারি পার্কের দৃশ্য? না, এটা আমাদের গর্ব নিঝুম দ্বীপের গল্প। খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষগুলোর দ্বীপে যেখানে হরিণই চাঞ্চল্যের উৎস। তবে এই হরিণগুলো কিন্তু শুধু দ্বীপের পরিবেশকেই নয়, মানুষগুলোকেও ব্যস্ত রাখে। দল বেধে এসে নষ্ট করে দেয় ক্ষেতের ফসল। ২০০৯ সালের শুরুর দিকে শীত মৌসুমে গিয়েছিলাম নোয়াখালীর হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে। তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স