Skip to main content

আইএস নিয়ে উল্টো খবর!




নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক : ইসলামিক স্টেট (আইএস) কারা পরিচালনা করে? এর নেপথ্যে কারা? এ নিয়ে বিপরীতমুখী কিছু খবর প্রকাশ হচ্ছে বিদেশি সংবাদ মাধ্যমে। আর সেসব খবরে আমাদের প্রচলিত ধারণা কেমন জানি উলটপালট হয়ে যাচ্ছে। সেইসব খবরে যারা আইএসের বিরুদ্ধে সরব তাদের দিকেই এখন অভিযোগের তীর।

আইএস চালায় মোসাদ!
 
ব্রিটেনের লেবার পার্টির সদস্য বব ক্যাম্পবেল অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ সন্ত্রাসী জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করছে। তিনি ব্রাসেলস হামলার জন্যও ইসরায়েলকে দায়ী করেন। তিনি এপ্রিলে তার ফেসবুক থেকে একটি ছবি শেয়ার করেছেন যাতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর শরীরের অর্ধেক অংশ জুড়ে আইএস- কথিত ‘খলিফা’ আবুবকর বাগদাদি যুক্ত রয়েছে।

ছবির মধ্যে লেখা রয়েছে, ‘আইএসই হচ্ছে একমাত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যে সিরিয়া থেকে দুই হাজার মাইল সফর করে প্যারিসে হামলা করতে পারলেও মাত্র ৫২ মাইল দূরে অবস্থিত ইসরায়েলের ওপর হামলা করে না! কারণ, কুকুর কখনও তার নিজ লেজে কামড় দেয় না। কারণ ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’ আইএসকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করছে।

বব ক্যাম্পবেল অন্য এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘ফ্রান্স ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরই আইএস ফ্রান্সে দুইবার সন্ত্রাসী হামলা চালায়; জাপান ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরই দুই জাপানি অপহৃত হয় ও আইএস তাদের হত্যা করে; ইন্দোনেশিয়া ফিলিস্তিনের গাজায় একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করার পরই আইএস জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের বৃহত্তম এই মুসলিম রাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা চালায়; ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে বেলজিয়াম একটি বৈঠকের আয়োজন করার পরই আইএস ইউরোপের এই দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলা চালায়। আরও কত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটার পর বিশ্ব বুঝতে পারবে যে ইসরায়েলই আইএসকে চালাচ্ছে?

ক্যাম্পবেলের এই বক্তব্যের পর তাকে লেবার পর্টি থেকে বহিষ্কারের দাবি করা হলেও তাকে বহিষ্কার করা হয়নি।

আইএসের উত্থানে দায়ী যুক্তরাষ্ট্র!

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড বলেছেন, ইরাক যুদ্ধের পর দেশটির সেনাবাহিনী থেকে বাথ পার্টির সমর্থকদের সরিয়ে দেওয়ার মার্কিন পরিকল্পনাই ইসলামিক স্টেট (আইএস)- এর উত্থান ঘটিয়েছে।

৭ জুলাই হাউজ অব কমন্সের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির সামনে তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরে ইরাক যুদ্ধে মার্কিন ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন হ্যামন্ড। ফিলিপ হ্যামন্ড বলেন, ‘সাদ্দামের পতনের পর ক্ষমতাসীন বাথ পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয়। এর ফলে তাৎক্ষণিক চাকরি হারান ইরাকি সেনাবাহিনীর প্রায় চার লাখ সদস্য। আর তাদেরই একটি বড় অংশ আইএস গড়ে তোলায় ভূমিকা রাখে।’

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কারের পর বহু বাথ পার্টির সমর্থক আইএসে যোগ দিয়ে বেশ বড় বড় পদ পেয়েছেন। তারাই মূলত আইএসের পেশাদার বাহিনী গঠনে বড় ভূমিকা পালন করছেন।’

তিনি বলেন, ‘ইরাক যুদ্ধের পর এই পরিকল্পনা ছিল সবচেয়ে বড় ভুল। আমরা যদি ভিন্ন পথ অনুসরণ করতাম তাহলে অবশ্যই আমরা ভিন্ন ফলাফল দেখতাম।’

চিলকট রিপোর্টে যুক্তরাজ্যের দায়

সম্প্রতি প্রকাশিত চিলকট প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরাককে নিরস্ত্র করার জন্য সকল শান্তিপূর্ণ উপায় না শেষ করেই টনি ব্লেয়ার ও তার সরকার সামরিক আগ্রাসনের পথ বেছে নেয়। কোনও রকম বিচারবিশ্লেষণ ছাড়াই সৈন্য পাঠানো হয় ইরাকে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সাদ্দাম হোসেন সন্দেহাতীত অত্যাচারী একনায়ক হলেও নিরাপত্তা কাউন্সিলের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতো। অনেক শান্তিপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও তা নেওয়া হয়নি।

ইরাক অভিযানের কারণে আইএসের উত্থানের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসবাদী হামলার হুমকিও বেড়ে গেছে।

ইরাক যুদ্ধ নিয়ে ২০০৯ সালে চিলকট কমিশন গঠিত হয়। দীর্ঘ ছয় বছর এই কমিশন ইরাক যুদ্ধের যাবতীয় তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে। স্যার জন চিলকট গত বছর বলেছিলেন, এ বছর তিনি রিপোর্টটি জনসম্মুখে প্রকাশ করতে সক্ষম হবেন। নিজের বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ইরাক যুদ্ধের ১৩ বছর পর ওই যুদ্ধে ব্রিটেনের ভূমিকা নিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করলেন তিনি।

কানাডিয়ান গ্লোবাল রিসার্চ যা বলে

আইএস মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থারই সৃষ্টি। আর সহযোগিতা করেছে ইসরায়েলের মোসাদ। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার (ডেবকা) সূত্র মতে, ২০১১ সালের মার্চে সিরীয় সংঘাত শুরুর পর তুর্কি হাইকমান্ডের সহযোগিতায় বিদেশি জিহাদি নিয়োগে ন্যাটোর যোগসাজশ পাওয়া গেছে।

আল কায়েদা সমর্থিত জিহাদিশক্তি আন নুসরা ফ্রন্টের পাশাপাশি আইএসও সিরিয়া বিদ্রোহে পশ্চিমা সামরিক জোটের সৈনিক হিসেবে কাজ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র-ন্যাটো-ইসরায়েল তাদের প্রচ্ছন্নভাবে সমর্থন জুগিয়েছে। বাশার আল আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী বাহিনী সৃষ্টিই তাদের ম্যানডেট। ইরাকে আইএস যেমন নৃশংসতা দেখিয়েছে, একই রকম নৃশংসতা দেখিয়েছে তারা সিরিয়ায়।

আইএস সন্ত্রাসীরা যে যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্রবাহিনী সমর্থিত, গণমাধ্যমের প্রোপাগান্ডার কারণে পশ্চিমা জনগণ এ বিষয়ে তেমন একটা সচেতন নয়।

ইরাকে নিষ্পাপ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আইএস সন্ত্রাসীদের হত্যাকাণ্ডকে ব্যবহার করা হয়েছে মার্কিন সামরিক আগ্রাসনের প্রেক্ষাপট তৈরিতে এবং মানবিক অর্থে সেই আগ্রাসনকে বৈধতা দান করতে।

উইকিলিকস

২০১৪ সালে ইউকিলিকস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির (এনএসএ) নথি ফাঁস করে। আর সেই নথিতে দেখা যায়- যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল এবং যুক্তরাজ্য আইএস সৃষ্টির নেপথ্যে ভূমিকা রেখেছে। আইএসের ‘খালিফা’ আবু বকর বাগদাদি তাদের গোয়েন্দা সংস্থার তৈরি।

আইএসকে বিস্ফোরক সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত

ইসলামিক স্টেট (আইএস)- এর কাছে ২০টি দেশ থেকে বিস্ফোরক এবং নানা ধরণের সামরিক রসদ যায়। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে বেশি রয়েছে তুরস্কে। তারপরই রয়েছে ভারত। যুক্তরাষ্ট্রও আছে তালিকায়।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএসকে ২০টি দেশের ৫১টি প্রতিষ্ঠান সামরিক রসদ সরবরাহ করে। প্রতিবেদনটি তৈরি হয়েছে, ‘কনফ্লিক্ট আর্মামেন্ট রিসার্চ' (সিএআর) নামের একটি সংস্থার পরিবেশন করা তথ্যের ভিত্তিতে।

সিএআর প্রায় ২০ মাসের চেষ্টায় পাওয়া তথ্যের আলোকে জানায়, সিরিয়া এবং ইরাকে আইএস যেসব অস্ত্র গোলাবারুদ নিয়ে যুদ্ধ করছে তার মধ্যে ওইসব দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর সরবরাহ করা অন্তত ৭০০ এমন ধরনের উপাদান রয়েছে যেসব উপাদান ‘ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস' বা আইইডি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

২০টি দেশের তালিকায় তুরস্ক, ভারত ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, রোমানিয়া, রাশিয়া, নেদারল্যান্ডস, চীন, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া আর চেক প্রজাতন্ত্রের মতো দেশের নামও রয়েছে।

রিটা কাৎজ ইসরায়েলি

আইএসের হুমকি আর হামলার খবর সবার আগে দেয় রিটা কাৎজের সাইট ইন্টেলিজেন্স। রিটা এখন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করলেও ১৯৬৩ সালে তিনি ইরাকের এক ইহুদি পরিবারে জন্ম নেন। ইসরায়েলের পক্ষে স্পাইয়ের কাজ করার অভিযোগে ১৯৬৮ সালে তার বাবা ইরাকে গ্রেফতার হন। পরে রিটার মা তাদের নিয়ে ইরান হয়ে ইসরায়েলে পালিয়ে যান। রিটা ইসরায়েলের তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। তখন তিনি ইসলায়েলের ডিফেন্স ফোর্সের সঙ্গেও কাজ করেন। তিনি ইংরেজি, আরবি এবং হিব্রু ভাষায় সমান পারদর্শী। পরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। তার সাইট ইন্টেলিজেন্স মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের কাছ থেকে পরামর্শ দাতা হিসেবেও কাজ করে।

বিভিন্ন বিদেশি গণমাধ্যম থেকে তথ্যগুলো নেওয়া

Comments

Popular posts from this blog

Never promoted terror, says Naik

News Express Desk : Accused of giving hate speeches, inciting acts of terror and disrespecting other religions, Dr. Naik said he had a right to express his view, given to him by the Constitution. He said he believed his religion was the best because, “the Koran says it. No other religious text or scripture claims this fact.” About inciting acts of terror, he challenged the media “to find out any instance where I have promoted terrorism or praised an act of terrorism.” In one of the clips floated on social media, Dr. Naik is seen supporting Al-Qaeda founder Osama bin Laden. He claimed that this clip was doctored and being used out of context. He said he was “neither a saint, nor a terrorist for me.” Preacher Zakir Naik on Friday at a small banquet hall in Mazgaon, addressed media persons via Skype: “My statements were taken out of context; they were half sentences, and were doctored. I am a messenger of peace. It is condemnable for any human, whether Muslim or non-Muslim, to attac...

এখনো চলছে রোহিঙ্গা নিধন

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে এখনো রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে প্রমাণ পেয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞে সেনা সদস্যদের পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র নিয়ে স্থানীয় বৌদ্ধরাও অংশ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এমনকি ২৫ আগস্টের আগে থেকেই রাখাইনে সেনা অভিযান চালানোর প্রস্তুতির প্রমাণ পেয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতায় স্বাক্ষর করলেও এখন নিধনযজ্ঞ থামেনি বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা এরআরডব্লিউ। সমঝোতার পরও রোহিঙ্গা গ্রাম পুড়িয়ে ফেলার আলামত পেয়েছেন তারা। স্থানীয় সময় গত রোববার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইনে আংশিক বা পুরোপুরি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ৩৫৪টি গ্রাম। এখনো বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণের পর সংস্থাটি জানায়, ছবিগুলো প্রমাণ করছে যে এই ধ্বংসযজ্ঞ এমন সময়েও চালানো হয়েছে যখন রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে মিয়া...

ফিলিস্তিনের ‘স্পাইডারম্যান’

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক : ১২ বছরের এক শিশুর কাজকারবারও এইটুকুন হওয়ার কথা। কিন্তু ফিলিস্তিনের পুঁচকে বালক মোহাম্মদ আল শেখের কাজকারবার দেখে ভিরমি লেগে যাবে অনেকের। এই বয়সেই ও নিজের শরীরকে দুমড়ে-মুচড়ে নানা কসরত দেখাতে পারে। তাক লাগানোর মতো সেসব কসরত। বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা শহরের তেল আল-হাওয়া এলাকার চার ফুট ছয় ইঞ্চি লম্বা ও ২৯ কিলোগ্রাম ওজনের মোহাম্মদ আল শেখ অসম্ভব সব শারীরিক কসরত দেখাতে পারে। নিজের পায়ের পাতা উল্টো দিক দ িয়ে নিয়ে এসে কাঁধের ওপর নিতে পারে সে। নিজের শরীরকে কয়েক ভাঁজ করে রেখে দিতে পারে। এ ছাড়া উঠের পিঠে উঠে ‘স্পাইডারম্যানের’ মতো লাফাতেও পারে সে। আর এ কারণে ফিলিস্তিনের গাজাবাসী তাকে ‘স্পাইডারম্যান’ আখ্যাও দিয়েছে। ওই এলাকায় এখন সে তারকা। তবে এই তারকাখ্যাতি পেয়ে ক্ষান্ত নয় মোহাম্মদ, এখন সবাইকে তাক লাগানো শারীরিক কসরত দেখিয়ে নিজের নামটি সে লিখে নিতে চায় গিনেস বুকের পাতায়। ২০১৪ সালে হাজায় ইসরায়েলি হামলায় দুই সহস্রাধিক ফিলিস্তিনির প্রাণহানি হয়। এ সময় প্রায় ৫০ দিন প্রশিক্ষণ বন্ধ থাকে মোহাম্মদের। এই যুদ্ধাবস্থার মাঝেও লেব...