শাহনেওয়াজ খান
১.
যেতে চেয়েছিলাম শুক্রবার সকালে। দুপুরে বিয়ের দাওয়াত খেয়ে ওই রাতেই ফিরব। কিন্তু বন্ধুরা সবাই আগের দিন (বৃহস্পতিবার) যাওয়ার পক্ষে মত দিল। অনেক দিন পর একসাথে দেখা হবে। অন্তত একটা রাত একসঙ্গে থাকা চাই। অনেকটা পুনর্মিলনীর মতোই। সুতরাং কোনো কথা নেই, বৃহস্পতিবারেই যাব। ফরহাদও অবশ্য ওর বিয়ে উপলক্ষ্যে বৃহস্পতি ও শুক্রবার উপস্থিত থাকার দাওয়াত দিয়েছে।
দাওয়াতি সবাই রাজি থাকলেও শেষ মুহূর্তে এসে যেতে পারল না এনাম। ঢাকা থেকে তাই আমি আর ইমরোজ যাচ্ছি। এখান থেকে ফেনীগামী একটাই বাস ‘স্টারলাইন’। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাই যথাসময়ে বাসের টিকিট পাওয়া অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার। অফিস থেকে বেরুনোর পর অবশ্য আমাকে টিকিটের ঝামেলা পোহাতে হয়নি। নন-এসি বাসের টিকিট না পেলেও এসি বাসের টিকিট কেনার যুদ্ধে জয়ী হয় ইমরোজ। ৩৫০ টাকার স্থানে ৩৬৫ করে লেগেছে এই আর কি। তবুও তো সোয়া ৫টার টিকিট পাওয়া গেল।
টিকিট পাওয়ার আনন্দ অবশ্য খানিকটা ম্লান হয়ে যায় পথে। রাত ১১টার পরে ফেনী গিয়ে পৌঁছাই। অথচ একই সার্ভিসের সাড়ে ৬টায় ছাড়া নন-এসি বাস আমাদের আগে পৌঁছায়! আনন্দ ম্লান হওয়ার কারণ শুধু দেরিতে পৌঁছানোই নয়, সাড়ে ৬টার বাসের টিকিট যে আমরাও পেয়েছিলাম। টিকিট প্রতি ৯৫ টাকা বেশি দিয়েও তেমন লাভ হল না।
ফেনীতে পৌঁছে গেলাম নাহিদের কাছে। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিল কুমিল্লা থেকে আসা নাজমুল। ফেনী পুলিশ লাইনসে থাকে সদ্য এসআই (উপ-পরিদর্শক) হিসেবে যোগ দেওয়া নাহিদ (পুলিশে যোগ দিলেও এখনো পুরোপুরি পুলিশ হয়ে উঠতে পারে নি, অনেকটা মানুষই রয়ে গেছে!)। ফরহাদের পীড়াপীড়িতে সেখানে বেশিক্ষণ থাকা গেল না। রাত সাড়ে ১২টায় পৌঁছলাম ফরহাদদের বাড়িতে। সারারাত ধরে চলা অনুষ্ঠানের ফাঁকে নিচে নেমে আড্ডা দিয়ে রাত কাটল। অসহ্য গরমের মাঝে ফজরের নামাজের পর ঘুমানোর ফুরসৎ পেলাম।
২.
শুক্রবার সকালে চলে গেলাম পুলিশ লাইনসে। সেখানে যোগ দিল চট্টগ্রাম থেকে আসা বাদশাহ। দুপুরে উপহার কেনা শেষে সরাসরি গেলাম কমিউনিটি সেন্টারে। বরের আসতে বেশ দেরি হচ্ছিল। অত্যধিক গরমে দাঁড়িয়ে থাকতেও খুব একটা ভাল লাগছিল না। অবশ্য আরেকজনের (নাম উহ্য থাক, নয়ত মাইন্ড করতে পারে!) আরও বেশি খারাপ লাগছিল। কারণ সে বরের সঙ্গে বরযাত্রী বেশে আসতে পারেনি!
বরের আগেই পাত্রপক্ষের গাড়িতে করে পৌঁছে গেল সে..ই.. রাজু (মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন)। ফেনীতে ও ক’দিন আগেই এসেছিল।
বরপক্ষ ও কনেপক্ষের সম্মিলিত আয়োজন। তাই উভয়পক্ষের আমন্ত্রিতরা কমিউনিটি সেন্টারে ছিল। অতিথিদের মধ্যে দুই শিশুকে কোন পক্ষ জিজ্ঞাসা করতে তারা জানাল, কনেপক্ষ। বিপরীতে আমাকে একই প্রশ্ন করায় উত্তর দিলাম, আমি দুই পক্ষেই। দু’জন অবাক হওয়ায় বললাম, বর আমার বন্ধু আর কনে আমার ভাবী। সুতরাং আমি তো উভয়পক্ষেরই! দুই শিশুকন্যা হাসতে হাসতে উত্তর দিল— উমম্, আপনি আমাদের ফুফুর (বুঝলাম তারা পাত্রীর ভাতিজি) পক্ষের নন।
এর মধ্যেই ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে আগমন ঘটল বরের। বরের সঙ্গে দেখা মিলল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বড়-ছোট ভাইদের। নিজ সহপাঠীদের পাশাপাশি অন্যদের সঙ্গেও অনেক দিন পর দেখা হওয়াটা অনেক বাড়তি পাওনা বৈকি।
৩.
অনেকদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক বন্ধু একত্রিত হওয়ায় গরমের যন্ত্রণাও আমাদের কাছে উপেক্ষিত হল। একসঙ্গে হওয়ার ভালো লাগায় হারিয়ে গেল সব কষ্ট। এ ছাড়া বন্ধুর বিয়ে, তার আনন্দের যে আমরাও সমভাগী! বর বন্ধুর হাসিমাখা মুখটাও আনন্দের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পালা। ঢাকা ফিরব আমি আর ইমরোজ। আমাদের সাথে কুমিল্লা পর্যন্ত আসবে নাজমুল। ও, আরেকজনের নাম বলতে ভুলে গেছি ‘ভোগান্তি’! সবার অগোচরে সেও রওয়ানা হল আমাদের সাথে।
প্রথমেই আগের নাটকের পুনঃমঞ্চায়ন। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে বাস কাউন্টারে আসলাম। আগামী এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যে টিকিট নেই। অগত্যা মহীপাল হয়ে উঠলাম চট্টগ্রাম থেকে আসা কুমিল্লাগামী বাসে। বেশ খানিক রাস্তা পেরুনোর পর জানতে পারলাম এটা কুমিল্লা বিশ্বরোড হয়ে যাবে না। বিশ্বরোডের আরেকটু আগে নামতে হল। কন্ডাক্টর বলেছিল, সেখান থেকে সিএনজি অটোরিক্সায় বিশ্বরোড পর্যন্ত ১০ টাকা করে ভাড়া নেবে। ১০ টাকা ভাড়া তো দূরের কথা যাওয়ার মতো কোনো অটোরিক্সাই পেলাম না! আবার বাসে উঠলাম। খানিক পথ এগোতই যানজট। গাড়ি আটকে আছে তো আছেই, এগুনোর নাম নেই। কেউ একজন বলে উঠল, এখান থেকে বিশ্বরোড ১০ মিনিটের পথ। ইমরোজও নিচে নেমে নিশ্চিত হল, হ্যাঁ ১০ মিনিটের পথই।
হাঁটছি তো হাঁটছি… মনে হচ্ছে আর কিছুদূর হাঁটলে ঢাকা চলে আসব। কিন্তু কুমিল্লা বিশ্বরোডেরই দেখা পাচ্ছি না! হায় ১০ মিনিট তুমি কত মিনিটে হও? এর মাঝে জ্যাম ছেড়ে দিল, বাসও চলে গেল। আমরা সেই আগের রাস্তায়ই হাঁটছি। শেষ পর্যন্ত হাঁটার পথ ফুরাল। না বিশ্বরোডের দেখা পাইনি। অটোরিক্সার দেখা পেয়েছি। তাতে উঠে সেই ১০ টাকা ভাড়ায় বিশ্বরোড!
বিশ্বরোড থেকে নাজমুল চলে গেল। আমাদের অবস্থা যাচ্ছেতাই। এর আগে তো যাই হোক বাসের দেখা পেয়েছিলাম। এবার আর ঢাকাগামী বাসের সাক্ষাৎ নেই। এক-দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর ঢাকাগামী একটি প্রাইভেটকার পাওয়া গেল। ভাড়া ঠিক করার আগেই জেঁকে বসল লোকাল বাসের হেল্পার-কন্ডাক্টরদের দালাল চক্র। নিজেরা সহজে বাস ছাড়বে না আর মাইক্রো-প্রাইভেটকারগুলোকেও থামতে দেবে না। তবে প্রাইভেটে যাত্রী নেওয়া যাবে কিন্তু এর জন্য চাঁদা দিতে হবে। এ নিয়ে তাদের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমাদের এক সহযাত্রী ১০০ টাকা দিয়ে দিলেন। এরপর প্রাইভেটকারে উঠে দুই-আড়াই ঘণ্টা পর ঢাকা পৌঁছলাম।
ওহ..হো, মাঝখানে বৃষ্টির কথা তো বলাই হয়নি। বাসে ফেনী থাকার সময়ই বৃষ্টি নামে। টিপটিপ বৃষ্টি নয়, প্রবল বৃষ্টি। অসহ্য গরম থেকে মুক্তি দিতে যেমনটা দরকার ঠিক তেমনই। সাথে সাথে মনে হল ফরহাদের কথা। সারাদিনের অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যার আগে শান্তির বৃষ্টি নামল। বিয়ের প্রথম দিনের এই শান্তির বৃষ্টির মতো শান্তি যেন ফরহাদের সারা দাম্পত্য জীবনে বজায় থাকে…
১.
যেতে চেয়েছিলাম শুক্রবার সকালে। দুপুরে বিয়ের দাওয়াত খেয়ে ওই রাতেই ফিরব। কিন্তু বন্ধুরা সবাই আগের দিন (বৃহস্পতিবার) যাওয়ার পক্ষে মত দিল। অনেক দিন পর একসাথে দেখা হবে। অন্তত একটা রাত একসঙ্গে থাকা চাই। অনেকটা পুনর্মিলনীর মতোই। সুতরাং কোনো কথা নেই, বৃহস্পতিবারেই যাব। ফরহাদও অবশ্য ওর বিয়ে উপলক্ষ্যে বৃহস্পতি ও শুক্রবার উপস্থিত থাকার দাওয়াত দিয়েছে।
দাওয়াতি সবাই রাজি থাকলেও শেষ মুহূর্তে এসে যেতে পারল না এনাম। ঢাকা থেকে তাই আমি আর ইমরোজ যাচ্ছি। এখান থেকে ফেনীগামী একটাই বাস ‘স্টারলাইন’। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাই যথাসময়ে বাসের টিকিট পাওয়া অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার। অফিস থেকে বেরুনোর পর অবশ্য আমাকে টিকিটের ঝামেলা পোহাতে হয়নি। নন-এসি বাসের টিকিট না পেলেও এসি বাসের টিকিট কেনার যুদ্ধে জয়ী হয় ইমরোজ। ৩৫০ টাকার স্থানে ৩৬৫ করে লেগেছে এই আর কি। তবুও তো সোয়া ৫টার টিকিট পাওয়া গেল।
টিকিট পাওয়ার আনন্দ অবশ্য খানিকটা ম্লান হয়ে যায় পথে। রাত ১১টার পরে ফেনী গিয়ে পৌঁছাই। অথচ একই সার্ভিসের সাড়ে ৬টায় ছাড়া নন-এসি বাস আমাদের আগে পৌঁছায়! আনন্দ ম্লান হওয়ার কারণ শুধু দেরিতে পৌঁছানোই নয়, সাড়ে ৬টার বাসের টিকিট যে আমরাও পেয়েছিলাম। টিকিট প্রতি ৯৫ টাকা বেশি দিয়েও তেমন লাভ হল না।
ফেনীতে পৌঁছে গেলাম নাহিদের কাছে। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিল কুমিল্লা থেকে আসা নাজমুল। ফেনী পুলিশ লাইনসে থাকে সদ্য এসআই (উপ-পরিদর্শক) হিসেবে যোগ দেওয়া নাহিদ (পুলিশে যোগ দিলেও এখনো পুরোপুরি পুলিশ হয়ে উঠতে পারে নি, অনেকটা মানুষই রয়ে গেছে!)। ফরহাদের পীড়াপীড়িতে সেখানে বেশিক্ষণ থাকা গেল না। রাত সাড়ে ১২টায় পৌঁছলাম ফরহাদদের বাড়িতে। সারারাত ধরে চলা অনুষ্ঠানের ফাঁকে নিচে নেমে আড্ডা দিয়ে রাত কাটল। অসহ্য গরমের মাঝে ফজরের নামাজের পর ঘুমানোর ফুরসৎ পেলাম।
২.
শুক্রবার সকালে চলে গেলাম পুলিশ লাইনসে। সেখানে যোগ দিল চট্টগ্রাম থেকে আসা বাদশাহ। দুপুরে উপহার কেনা শেষে সরাসরি গেলাম কমিউনিটি সেন্টারে। বরের আসতে বেশ দেরি হচ্ছিল। অত্যধিক গরমে দাঁড়িয়ে থাকতেও খুব একটা ভাল লাগছিল না। অবশ্য আরেকজনের (নাম উহ্য থাক, নয়ত মাইন্ড করতে পারে!) আরও বেশি খারাপ লাগছিল। কারণ সে বরের সঙ্গে বরযাত্রী বেশে আসতে পারেনি!
বরের আগেই পাত্রপক্ষের গাড়িতে করে পৌঁছে গেল সে..ই.. রাজু (মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন)। ফেনীতে ও ক’দিন আগেই এসেছিল।
বরপক্ষ ও কনেপক্ষের সম্মিলিত আয়োজন। তাই উভয়পক্ষের আমন্ত্রিতরা কমিউনিটি সেন্টারে ছিল। অতিথিদের মধ্যে দুই শিশুকে কোন পক্ষ জিজ্ঞাসা করতে তারা জানাল, কনেপক্ষ। বিপরীতে আমাকে একই প্রশ্ন করায় উত্তর দিলাম, আমি দুই পক্ষেই। দু’জন অবাক হওয়ায় বললাম, বর আমার বন্ধু আর কনে আমার ভাবী। সুতরাং আমি তো উভয়পক্ষেরই! দুই শিশুকন্যা হাসতে হাসতে উত্তর দিল— উমম্, আপনি আমাদের ফুফুর (বুঝলাম তারা পাত্রীর ভাতিজি) পক্ষের নন।
এর মধ্যেই ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে আগমন ঘটল বরের। বরের সঙ্গে দেখা মিলল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বড়-ছোট ভাইদের। নিজ সহপাঠীদের পাশাপাশি অন্যদের সঙ্গেও অনেক দিন পর দেখা হওয়াটা অনেক বাড়তি পাওনা বৈকি।
৩.
অনেকদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক বন্ধু একত্রিত হওয়ায় গরমের যন্ত্রণাও আমাদের কাছে উপেক্ষিত হল। একসঙ্গে হওয়ার ভালো লাগায় হারিয়ে গেল সব কষ্ট। এ ছাড়া বন্ধুর বিয়ে, তার আনন্দের যে আমরাও সমভাগী! বর বন্ধুর হাসিমাখা মুখটাও আনন্দের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পালা। ঢাকা ফিরব আমি আর ইমরোজ। আমাদের সাথে কুমিল্লা পর্যন্ত আসবে নাজমুল। ও, আরেকজনের নাম বলতে ভুলে গেছি ‘ভোগান্তি’! সবার অগোচরে সেও রওয়ানা হল আমাদের সাথে।
প্রথমেই আগের নাটকের পুনঃমঞ্চায়ন। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে বাস কাউন্টারে আসলাম। আগামী এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যে টিকিট নেই। অগত্যা মহীপাল হয়ে উঠলাম চট্টগ্রাম থেকে আসা কুমিল্লাগামী বাসে। বেশ খানিক রাস্তা পেরুনোর পর জানতে পারলাম এটা কুমিল্লা বিশ্বরোড হয়ে যাবে না। বিশ্বরোডের আরেকটু আগে নামতে হল। কন্ডাক্টর বলেছিল, সেখান থেকে সিএনজি অটোরিক্সায় বিশ্বরোড পর্যন্ত ১০ টাকা করে ভাড়া নেবে। ১০ টাকা ভাড়া তো দূরের কথা যাওয়ার মতো কোনো অটোরিক্সাই পেলাম না! আবার বাসে উঠলাম। খানিক পথ এগোতই যানজট। গাড়ি আটকে আছে তো আছেই, এগুনোর নাম নেই। কেউ একজন বলে উঠল, এখান থেকে বিশ্বরোড ১০ মিনিটের পথ। ইমরোজও নিচে নেমে নিশ্চিত হল, হ্যাঁ ১০ মিনিটের পথই।
হাঁটছি তো হাঁটছি… মনে হচ্ছে আর কিছুদূর হাঁটলে ঢাকা চলে আসব। কিন্তু কুমিল্লা বিশ্বরোডেরই দেখা পাচ্ছি না! হায় ১০ মিনিট তুমি কত মিনিটে হও? এর মাঝে জ্যাম ছেড়ে দিল, বাসও চলে গেল। আমরা সেই আগের রাস্তায়ই হাঁটছি। শেষ পর্যন্ত হাঁটার পথ ফুরাল। না বিশ্বরোডের দেখা পাইনি। অটোরিক্সার দেখা পেয়েছি। তাতে উঠে সেই ১০ টাকা ভাড়ায় বিশ্বরোড!
বিশ্বরোড থেকে নাজমুল চলে গেল। আমাদের অবস্থা যাচ্ছেতাই। এর আগে তো যাই হোক বাসের দেখা পেয়েছিলাম। এবার আর ঢাকাগামী বাসের সাক্ষাৎ নেই। এক-দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর ঢাকাগামী একটি প্রাইভেটকার পাওয়া গেল। ভাড়া ঠিক করার আগেই জেঁকে বসল লোকাল বাসের হেল্পার-কন্ডাক্টরদের দালাল চক্র। নিজেরা সহজে বাস ছাড়বে না আর মাইক্রো-প্রাইভেটকারগুলোকেও থামতে দেবে না। তবে প্রাইভেটে যাত্রী নেওয়া যাবে কিন্তু এর জন্য চাঁদা দিতে হবে। এ নিয়ে তাদের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমাদের এক সহযাত্রী ১০০ টাকা দিয়ে দিলেন। এরপর প্রাইভেটকারে উঠে দুই-আড়াই ঘণ্টা পর ঢাকা পৌঁছলাম।
ওহ..হো, মাঝখানে বৃষ্টির কথা তো বলাই হয়নি। বাসে ফেনী থাকার সময়ই বৃষ্টি নামে। টিপটিপ বৃষ্টি নয়, প্রবল বৃষ্টি। অসহ্য গরম থেকে মুক্তি দিতে যেমনটা দরকার ঠিক তেমনই। সাথে সাথে মনে হল ফরহাদের কথা। সারাদিনের অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যার আগে শান্তির বৃষ্টি নামল। বিয়ের প্রথম দিনের এই শান্তির বৃষ্টির মতো শান্তি যেন ফরহাদের সারা দাম্পত্য জীবনে বজায় থাকে…
Comments
Post a Comment