Skip to main content

ভোটাধিকার ও নাগরিক অধিকার

শাহনেওয়াজ খান



রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে মানুষের মৌলিক অধিকার ৪টি— খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসা। অনেকে এর সঙ্গে শিক্ষাকেও যোগ করে থাকেন। তবে আমাদের বাংলাদেশিদের কাছে মনে হয় এগুলোর চেয়েও বড় আরেকটি অধিকার রয়েছে, সেটা হল— ভোটাধিকার।

বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রে জন্ম নেওয়ার পর কয়জন তাদের নাগরিক মৌলিক অধিকার পূর্ণরূপে ভোগ করতে পেরেছেন তা খুঁজতে অনুবীক্ষণ যন্ত্র লাগবে। তবে কতজন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন তা গুনে শেষ করা যাবে না। কি মনে হয়, বাঙালির কাছে মৌলিক অধিকারের চেয়ে কাছে ভোটাধিকারই বেশি গুরুত্বপূর্ণ! অনেকটা তাই। এ জন্যই তো মৌলিক অধিকার হরণকারী নেতাদেরই ভোট দিতে বারবার ছুটে যাই আমরা।

তবে মাঝে মাঝে এতে ছন্দপতন ঘটে। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ভোট দিতে যেতে পারি না আমরা। যেমন— শেখ হাসিনার অধীনে ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচন ও ২০১৫ সালের সিটি নির্বাচন। এর আগেও এ ধরনের একতরফা ও প্রহসনমূলক সংসদ নির্বাচন দেখেছে বাংলাদেশের নাগরিকরা। শেখ মুজিবুর রহমানের অধীনে ১৯৭৩ সালে, জিয়াউর রহমানের অধীনে ১৯৭৯ সালে, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অধীনে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে এবং খালেদা জিয়ার অধীনে ১৯৯৬ সালে। অর্থাৎ বাংলাদেশ শাসন করা সব রাষ্ট্রপ্রধানের অধীনেই আমরা একতরফা নির্বাচন দেখেছি।

পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলেও ইদানীং এ ধরনের নির্বাচন ঘন ঘন অনুষ্ঠিত হওয়ায় বিরক্ত (!) বাঙালি এক সময় তাদের সেই মহান ভোটাধিকারের প্রতি অবজ্ঞা দেখাতে শুরু করতে পারে।

ইস, এ দিনটা যেন তাড়াতাড়ি আসে। আমরা যেন স্বার্থলোভী ও তাদের নোংরা পদ্ধতিকে ঘৃণা করতে শিখি।

Comments

Popular posts from this blog

হিন্দুবিদ্বেষী ছিলেন না সম্রাট আওরঙ্গজেব

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক: মুঘল সম্রাটদের মধ্যে কেবল একজনই ভারতীয়দের মধ্যে স্থান করে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন - তিনি আলমগীর আওরঙ্গজেব। সাধারণ মানুষের মধ্যে আওরঙ্গজেবের ইমেজ হলো একজন ধর্মীয় গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবে , যিনি হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর যিনি নিজের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে এমনকি নিজের বড় ভাই দারা শিকোকে পর্যন্ত রেহাই দেননি। তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি বৃদ্ধ পিতাকে আগ্রার একটি দুর্গে তার জীবনের শেষ সাড়ে সাত বছর বন্দি করে রেখেছিলেন। সম্প্রতি পাকিস্তানী নাট্যকার শাহীদ নাদিম লিখেছেন যে ভারত ভাগের বীজ সত্যিকার অর্থে সেদিনই বপন করা হয়েছিল , যেদিন আওরঙ্গজেব তার ভাই দারাকে পরাজিত করেছিলেন। জওহরলাল নেহরুও ১৯৪৬ সালের প্রকাশিত তার বই ‘ ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া ’ তে আওরঙ্গজেবকে একজন গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন। তবে মার্কিন ইতিহাসবিদ অড্রে ট্রাশকা তার বই ‘ আওরঙ্গজেব - দ্যা ম্যান অ্যান্ড দ্যা মিথ ’ বইয়ে লিখেছেন যে আওরঙ্গজেব হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর তাই মন্দির ধ্বংস কর

দাঁড়িয়ে পানি পান কি ঠিক?

নিউজ এক্সপ্রেস ডেস্ক : সময় কিংবা অভ্যাসের কারণে আমরা অনেকেই দাঁড়িয়ে পানি পান করি। কিন্তু এই অভ্যাসের মাধ্যমে আমরা ডেকে আনছি বিপদ। একটা নয়, একগুচ্ছ রোগ বাসা বাঁধছে শরীরে। ভুগতে হচ্ছে কিডনি সমস্যায়। শরীরে পানির গুরুত্ব অনেক। কিন্তু ভুল নিয়মে পানি, বিশেষ করে রাস্তাঘাটে চলতে ফিরতে ঢকঢক করে পানি পানের অভ্যাসে শরীরে বাসা বাঁধছে নানা রোগ- এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। দাঁড়িয়ে পানি পানের কুফল শরীরে টক্সিনের পরিমাণ বাড়ে: পানি পানের পরেই শরীরের ছাঁকনিগুলো শরীরকে পরিশ্রুত করার কাজ শুরু করে। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরের ভিতরে থাকা ছাঁকনিগুলো সংকুচিত হয়ে যায়। পরিশ্রুত করার কাজ বাধা পায়। ফলে, শরীরে টক্সিনের মাত্রা বাড়তে থাকে। পাকস্থলীতে ক্ষত: দাঁড়িয়ে পানি পান করলে তা সরাসরি পাকস্থলীতে গিয়ে আঘাত করে। পাকস্থলী থেকে নিঃসৃত অ্যাসিডের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বদহজমের আশঙ্কা বাড়ে। তলপেটে যন্ত্রণাসহ একাধিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর্থারাইটিসের আশঙ্কা: দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরের মধ্যে থাকা কিছু উপকারী রাসায়নিকের মাত্রা কমতে থাকে। ফলে হাড়ের জোড়ায় কর্মক্ষমতা কমে যায়। সেখান থেকে আর্থারাইটিসের আশ

হরিণের রাজ্যে

শাহনেওয়াজ খান আমরা দশ-বারোজন মিলে চারদিক থেকে ঘিরে ধরলাম হরিণের পালটাকে। ৬০-৭০টা হরিণ হবে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ঘুরে ঘুরে পালটাকে ঘিরে ধরেছি। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসায় আলো দ্রুত কমে যাচ্ছে। শেষ সময়, সুতরাং সবাই চারদিক দিয়ে এক নিঃশ্বাসে দৌড় দিলাম হরিণের পালকে আটকাতে। কি অপূর্ব সেই দৃশ্য! আমার দু’পাশ দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে হরিণ। এত জোরে দৌড়াচ্ছে যে পায়ের নিচের খুড়ের অংশগুলো ঠিক স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। হরিণের ওপর ঝাঁপ দিয়ে পড়ার ইচ্ছেটা শুরুতেই তো বড় বড় শিং দেখে মারা গিয়েছিল। এখন দৌড় দেখে উল্টো চুপসে গেলাম। মনে মনে প্রার্থনা শুরু করলাম, হে আল্লাহ, শিং বা খুরের আঁচড় যেন গায়ে না লাগে। বর্ণনা শুনে মনে হচ্ছে, এটা সুন্দরবন বা বিদেশি কোনো সাফারি পার্কের দৃশ্য? না, এটা আমাদের গর্ব নিঝুম দ্বীপের গল্প। খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষগুলোর দ্বীপে যেখানে হরিণই চাঞ্চল্যের উৎস। তবে এই হরিণগুলো কিন্তু শুধু দ্বীপের পরিবেশকেই নয়, মানুষগুলোকেও ব্যস্ত রাখে। দল বেধে এসে নষ্ট করে দেয় ক্ষেতের ফসল। ২০০৯ সালের শুরুর দিকে শীত মৌসুমে গিয়েছিলাম নোয়াখালীর হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে। তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স